Friday, 21 October 2016

চমক




চায়ের কাপে চামচ নাডতে নাডতে চুপচাপ কথাগুলো শুনছিল বিতান।
চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বললো অদিতি।
কিন্তু ওতো দামি চা টাও বিস্বাদ লাগছিলো বিতানের।
অদিতর কথাগুলো কানে বাজছে
আজ থেকে আর কোন যোগাযোগ নয়, ফোন নয় সব শেষ। হ্যাঁ এভাবেই চা চুমুক দিতে দিতে
কথাগুলো বললো অদিতি
_দেখো বাবা মার বযস হয়েছে আর আমারও তো 34 হলো তুমি তো এতদিনেও কিছু
জোগাড় করতে পারলে না। তাদের আমি আর কিভাবে ঠেকিয়ে রাখবো বলো।_
_আমি তো চেষ্টা করছি অদিতি, না কথাগুলো বলতে পারলো না বিতান।
আজ থেকে আর কোনোমতেই যোগাযোগ করো না বিতান। কথাটা বলে
ধীর পায়ে উঠে বাস স্ট্যান্ডে র দিকে চলে গেলো অদিতি।
আজ অনেকদিন আগের সেই আলাপের প্রথম দিনটা মনে পড়ে গেলো বিতানের।
কাকতালীয় ভাবেই আলাপ হয়েছিলো তাদের
মনে আছে রানীর বাড়ি দমদম থেকে ফিরছিলেন বিতান, কিন্তু স্টেশন এসে শুরু হলো
মুষলধারে বৃষ্টি, ছাতা ছিলো না, এমনিতে ছাতা নেবার অভ্যাস নেই বিতানের তারপর এটা বর্ষা কাল ও নয় তাই সেডের তলায় দাড়িয়ে ছিলো ট্রেনে র অপেক্ষা য।
ঐ সময় একটি মেয়ে প্রায় কাকভেজা হযে এসে দাডালো কোনোমতে আঁচল দিয়ে
মাথা মুছতে মুছতে প্রশ্ন করলো
_আচ্ছা রানাঘাট লোকাল কি চলে গেছে? জানি না বলতে পারবো না বললো বিতান
_আপনি কোথায় যাবেন?
_রানাঘাট, আপনি
_নৈহাটি
এভাবেই দুচার কথার পর ওর ট্রেন চলে আসতে আর কথা এগোয়নি
এরকম ঘটনা প্রাযশ ই ঘটে নিত্য যাতায়াত পথে কত পরিচয় হয় তাই সেভাবেই
এ ঘটনা মনে দাগ কাটে না এবং বিতান ভুলেও যায় কিন্তু আবার কিছুদিন পর ঐ
একই স্টেশনে আবার দেখা হয় দুজনের
এরপর প্রায় ই দেখা হতে হতে আলাপ টা একদিন ঘনিষ্ঠতা য যায়। কথায় কথায়
জানতে পারে বিতান
অদিতি র বাড়ি রানাঘাট কিন্তু ও ইচ্ছে করেই দমদম মতিঝিল কলেজে ভর্তি হয়েছে
কারন টা আর কিছু ই নয় ওর কোন একজন প্রিয় কবি যিনি এই কলেজের ইতিহাসের
অধ্যাপক তারই টানে এতদূরে পড়তে আসা।
বিতান ও জানায় তাকে তার বেকার জীবনের কথা কযেটা টিউশনি ভরসা আর চাকরীর
চেষ্টা র গল্প।
এভাবেই ফোন নং দেওয়া নেওয়া হয় কিন্তু কেউ কাউকে ফোন করেনা। ্
এরপর একদিন রানিকে নিয়ে ফিরছিলো বিতান
ইদানিং রানির প্রতি তার শ্বশুর বাড়ি র নির্যাতন টা বেশ বাড়াবাড়ি র পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল কিন্তু মা আশ্চর্য রকমের উদাসীন ছিলো এ ব্যাপারে বিতান ভাবতো সাংসারিক টানাটানিই এর কারন কিন্তু না বিতান দেখেছে মায়ের সেরকম কোন টেনশন নেই রানিকে নিয়ে।
বরং বিতান মাঝে মাঝেই ওর বাড়ি যায় বলে বেশ বিরক্ত বলেন ওর সংসার ওর মতো করে করতে দাও ওর বাবাই তো বিয়ে দিয়ে গেছেন।
তখন বিতান ভাবতো হয়তো এ বিয়েতে মার মত ছিলো না তাই মা এখন উদাসীন আর বাবাও তো রানির বিযের তিন বছরের মাথায় মারা গেছেন।
তখন বিতান ছোট ছিলো তাই কিছু বুঝতে না রানি ওর থেকে দশ বছরের বড় কিন্তু এখন সে বড় হয়েছে এরকম অরাজকতা চলতে দেবে না যেভাবেই হোক রানিকে দুবেলা সম্মানের অন্ন যোগাবে
তাই সেদিন রানিকে সংগে নিয়ে ই ফিরছিলো বিতান
দূরে অদিতি কে দেখতে পেয়ে সামনের কমপারমেন্টে ই উঠে পড়লো রানিকে নিয়ে
না, বিতান চাযনি রানিকে নিয়ে কেউ অযথা কৌতুহল দেখাক।
সে রাতেই অদিতির প্রথম ফোনটা এসেছিলো।
বিতানের বুক টা দুরুদুরু করছিলো
ও ভেবেছিলো অদিতি মনে হয় বুঝতে পেরেছে যে আজ ও অদিতি কে এডিযে গেছে।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন তুলে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে অদিতির মিষ্টি কন্ঠস্বর শোনা যায়।
_কেমন আছো?
-_ভালো তুমি?
_আমিও ভালো, অনেকদিন দেখি না তাই অনেক দ্বিধা দন্ধে থেকেও ফোন টা করেই ফেললাম।
_না না, তাতে কি, ভালোই করেছো ফোন করে নং দেওয়া টা সার্থক হলো
মনে মনে বললো বিতান যাক বাবা তাহলে রানিকে আর তাকে একসাথে দেখেনি অদিতি।
তারপর মামুলি দু একটা কথার পর ফোন রেখে দেয় অদিতি।
আজ বছর দশেক হযে গেছে রানির বিয়ের কিন্তু বাচ্চা না হওয়াতে শ্বশুর বাড়ির লোক এবং জয় দা অকথ্য অত্যাচার শুরু করেছিলো রানির উপর।
বিতান গেলেও একের পর এক নালিশ আসতো রানির নামে যদিও বিতান জানে রানি খুবই ভালো মেয়ে, সাতটি চডেও রা কাডে না।
বাবা থাকতে বাপের বাড়ি যখন আসতো তখন ও দেখতো বিতান মায়ের নানা অসন্তোষ তবুও রানি হাসিমুখে মায়ের সব কাজ করে দিতো।
বাবা মারা যাবার পর রানির আসা বন্ধ হয়ে গেলো।
ছোট থেকে একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে বিতান অন্য মেয়েদের যেমন মার সাথে ভাব থাকে সব কথা আদান প্রদান থাকে মার সাথে রানির সম্পর্ক টা ঠিক সেরম নয় এর কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাযনি বিতান। আজকের এই আপাত ঘটনা তাকে খুবই আঘাত করে গেলো কিন্তু কি আর করার ছিলো সামান্য টিউশনির ভরসয রানির খরচ নিজের খরচ চালিয়ে আবার একটা সংসার পাতা নিছক অবাস্তব কল্পনা মাত্র।
মন বিষন্ন নিয়ে ই বাড়ি ফিরলো সে।
দরজার মুখ থেকেই রোজকার মতো মায়ের গজগজ শোনা যাচ্ছিল যদিও রানির তাতে কোন হেলদোল নেই, সে এতেই অভ্যস্ত।
ঘরে ঢুকে রানিকে এক গ্লাস জল দিতে বলে জামা কাপড় ছাড়তে চলে গেলো ও।
কিন্তু তার এই মনমরা ভাব রানির চোখ এডায নি, জল দিতে এসে জিজ্ঞেস করে সে
_কিরে ভাই মন খারাপ কেন?
_না রে কিছু না,
_আমার জন্য তোর এই অবস্থা, কি হয়েছে রে, অদিতি কিছু বলেছে?
অবাক হয বিতান, রানি কি করে জানালো সে তো কখনও কিছু বলেনি।
তার অবাক ভাব খেয়াল করে রানি বলে,
_একদিন ফোন এসেছিলো, আমি তুলিনি তুই বাথরুমেছিলিস আমি তখন নামটা দেখি, তোর কাছে তো কখনো কোন মেয়ের ফোন আসে না তাই আন্দাজ করলাম তোর বিশেষ বান্ধবী হবে
তুই কবে নিজে থেকে বলবি তার অপেক্ষা করছিলাম।
_ও তাই বল, না তেমন কিছু না, ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
_সেকি কবে, কোথায়, ছেলে কি করে?
_আরে দাঁডা দাঁডা, এতো প্রশ্ন একসাথে করছিস, আমি ওকে কিছুই জিজ্ঞেস করিনি।
_তুই একটা হাঁদা।
_হবে হয়তো
রানি চলে যেতে একটু সুস্থির হলো বিতান। মনে মনে ভাবল আর কি কি অপেক্ষা করে আছে তার জীবনে। এমন আর কোথাও একটু শান্তি পাওয়া যাবে কি? রাতে এমনই চোখে ঘুম আসতে চায়না রাত জেগে বই পড়ার অভ্যাস অনেকদিনের।
সেদিন অদিতির কাছ থেকে চলে আসার পর দু’মাস কেটে গেছে কিন্তু না ওর দিক থেকে আর কোন খবর আসেনি।
বিতান ভেবেছিলো অন্তত একটা নিমন্ত্রণ পত্র পাবে জাস্ট ফর্মালিটি হিসেবে কিন্তু না সেরকম কিছুই হলো না।
বিতান আবার অভস্থ হযে গেলো বাঁধাধরা জীবনে।
সকাল থেকে একটার পর একটা টিউশন আর বাড়ি।
এরকমই একদিন বাড়ি ফিরে সবে একটু রেস্ট নিচ্ছে দেখলো দরজায় অতিথি জয় দা।
তাহলে কি ভুল বুঝতে পেরে রানিকে নিতে এসেছে।
ভদ্রতা করে বলতেই হলো
_এসো জয় দা ভেতরে এসো। রানিকে হাঁক দিয়ে বললো জয় দা এসেছে একটু চা নিয়ে বাইরের ঘরে আয।
মা কে বেশ প্রফুল্ল দেখালো ভাবলো যাক আপদ বিদায় হবে।
রানি চা নিয়ে এলে জয় দা শুধু একটা কথাই বললো
_আমি আবার বিয়ে করে সংসার করতে চাই তাতে তোমার সম্মতি প্রয়োজন।
ও এই ব্যাপার তার মানে জয় দা ঘুরিয়ে ডিভোর্স এর কথা বলতে এসেছে। সে রানির মুখ চেয়ে
আপ্রাণ বোঝাতে চাইলো জয় দা কে।
বাচ্চা না হওয়া টা রানির দোষ নয়।
তার জন্য এতদিনের সম্পর্কে চির ধরানো উচিত নয়। কিন্তু না জয় দা কোনভাবেই রাজি নয়
এ সম্পর্ক টিঁকিয রাখতে আর রানি যাকে বিতান বেশ নরম সরম মেয়ে বলে জানতো
সে বিতান কে অবাক করে দিয়ে ঠান্ডা গলায় বললো
_বেশ, তুমি যা চাও তাই হবে। আমি সই করে দেবো।
এরপর আর জয় দা বসেনি
রাতে খেতে বসে বিতান একটা কথাই বললো
_তুই রাজি হলি কেন? তুই রাজি না হলে কিছু করতে পারতো না।
রানির উত্তর_আমার এমন ভাই আছে তাকে ভরসা করি আমি।
এরপর কোন কথা চলে না।
সত্যি ছোটবেলা থেকে রানি তাকে আগলে রেখেছিলো। তার গায়ে কোন আঁচ লাগতে দেয়নি
অথচ দশ বছরের বড় দিদিকে কেন যে নাম ধরে ডাকা শিখিযেছিলো মা তা জানেনা বিতান।
বড় হবার পর আর নতুন করে অভ্যেস বদলাতে পারেনি বিতান। সেদিন জয় দা চলে যাবার পর
মাকে একটু গম্ভীর দেখলো বিতান।
বুঝতে পারল যে মা রানির এই ডিভোর্স এর ব্যাপারটা ভালো ভাবে নিচ্ছে না হয়তো মনে মনে বিতানকেই দাযি করছে। বিতান যদি ওকে সাথে করে না আনতে তাহলে বোধহয় ছাড়াছাড়ি টা হতো না আর মা হয়তো এটাও ভাবছে চিরকালের মতো রানির দায়িত্ব বিতানের উপর বর্তালো।
রা নিকে যেমন মা পছন্দ করে না বিতানের বেলায় পুরোপুরি উল্টো সেটা কি শুধুই বিতান ছেলে বলে নাকি একটু বেশি বয়সের সন্তান বলে।
ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে সে যে মা ওকে একটু বেশিই প্রশ্রয় দেয়।
বাবা চলে যাওয়াতে সেটা আরো বাড়ে।
মাঝে মাঝে মায়ের এই পক্খপাতে যথেষ্ট বিরক্ত বোধ করে বিতান।
কোন কোন সময় ব্যাপারটা বেশ দৃষ্টি কূটু পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
শরীর খারাপের অছিলায একটু তাড়াতাড়ি ই শুতে যায় আজ বিতান। কিন্তু ঘুম আসতে চায় না তার জীবনের এক একটা বাঁকে কি অপেক্ষা করে আছে কে জানে।
রাত কত আন্দাজ করতে পারে না বিতান রানির ঘর থেকে একটা ফোঁপানো কান্নার আওয়াজ আসে।
উঠে আলো জ্বেলে ঘড়ি দেখে বিতান রাত প্রায় আডাইটের কাছাকাছি এখন ও রানি জেগে আছে? তাহলে কি ও মন থেকে জয় দার সাথে ছাড়াছাড়ি টা মানতে পারেনি।
হ্যাঁ, বিতান জানে রানি দূর্বল মনের সাদাসিধে মেয়ে তাই তখন ঐ কাঠিন্য দেখে চমকে ছিলো বিতান।
কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই ভাগ্যকে মানতে হবে।
ভাগ্য তো আর জলে থাকা মাছ নয় যে জ্বাল ফেলে ধরবো কৌশলে ফেলবো আর হাতে ভস্ম মেখে পিছলে যেতে দেবো না।
তাই যদি হতো তাহলে বিতান এতদিনে এত ভালো রেজাল্ট নিয়ে বেকার বসে থাকতো না।
আস্তে আস্তে রানির ঘরের দিকে গেলো বিতান দরজায় টোকা দিতেই দরজা খুলে গেল।
বিতান দেখলো দরজা আলগা করে ভেজানো ছিল।
ঘরে ঢুকতেই চোখ মুছে উঠে এলো রানি।
_কিরে ঘুমোস নি?
_তুই ও তো ঘুমোস নি, কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?
_আমার কেমন ভাগ্য তাই ভেবে।
_কেন আমাকে ভরসা করিস বললি এই তার নমুনা?
_না রে তোকে ভরসা করি ঠিকই কিন্তু ভাগ্যকে ভরসা করতে পারছি না
বিতান দেখলো খাটের উপর একটা ডায়েরি পরে আছে।
জিজ্ঞেস করলো
_কার ওটা তোর?
_না, বাবার লেখা, এই পুরোন কথা পড়ছিলাম।
এবার বিতান বুঝতে পারে যে জয় দার জন্য নয় আসলে রানি বাবার কথা মনে পরাতে কাঁদছে ও বাবার খুব আদরের ছিলো আজ এই অসহাযতার দিনে বাবাকে মনে পড়ছে।
ও ঘর থেকে চলে আসে।
পরের দিন নিছক কৌতুহলী হযেই বাবার ডায়েরি টা ওর ঘর থেকে নিয়ে আসে বিতান
রাতের বেলা আস্তে আস্তে মেলে ধরে খাতা খানা।
প্রতি পাতায় লুকিয়ে আছে রহস্য।
জানতে পারে বিতান রানির কান্না র রহস্য।
পরতে পরতে থমকে যায় সে এতো কষ্ট রানির জীবনে, জানতে পারে সে রানি মাত্র 5 বছর বয়সে তার মাকে হারায়, তারপর বিব্রত মুখার্জি পুনরায় দার পরিগ্রহ করে ওকে মানুষ করার জন্য।
এতক্ষনে পরিষ্কার হয় বিতানের কাছে কেন মা রানিকে পছন্দ করে না, রানির ভাগ্যের কি আশ্চর্য পরিহাস, এক মেয়ে শিশু কালে মা হারা সে নিজে যখন মা হতে চায় তখন শিশু হারা
কি চমৎকার না, একটি নারী না পেলো মায়ের স্বাদ না পেলো মাতৃত্বের স্বাদ।
আর ভালো লাগলো না পড়তে আর কি কি লুকিয়ে আছে পাতার খাঁজে খাঁজে জানতে মন চাইলো না। শুধু একটাই প্রতিজ্ঞা সে সবটুকু দিয়ে রানিকে ভরিয়ে রাখবে বাবা মা সন্তান সব ঘাটতি ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করবে।
তার নিজেকে দায়ী মনে হলো এসবের জন্য সে না এলে রানি বঞ্চিত হতো না
স্বাভাবিক ভাবেই এক নারী যখন নিজের সন্তান ধারন করে তখন তার উপরেই স্নেহ বেশি যায় আর সে যদি পুত্র হয় তবে তো কথাই নেই।
বাবার খাতা থেকেই জেনেছে ও যে তার জন্মের পরেই মা কেমন রানির থেকে দূরে সরে যায়
বাবা ভেবেছিলো বেশি বয়সের সন্তান বলেই বুঝি এমন কিন্তু তানা আসলে আপন পর ব্যাপারটা মা উপলব্ধি করছিলো। তাই বিতানকেও দশ বছরের দিদিকে দিদি ডাকতে শেখান নি উনি।

মাযের প্রতি সব শ্রদ্ধা টা যেনো এক নিমেষে উবে গেলো বিতানের।
এর পর থেকে রোজ ই ফেরার পথে রানির জন্য আনতে লাগলো চকোলেট, শাড়ি, বই রানি র অপ্রস্তুত ভাব দেখে বলেই ফেললো ছোটবেলা থেকে এসব থেকে বঞ্চিত করেছি আজ তোকে ছোটবেলা ফিরিয়ে দিতে পারবো না কিন্তু তোর জন্য এটুকু আমায় করতে দে।
এভাবেই আবার তাদের সংসার চলছিলো
একদিন বাড়ি ফিরেই আনন্দ এর খবর এলো, রানি এসে একটা চিঠি দিলো তার হাতে প্রথমে ওটা অদিতি র চিঠি ভেবে খুলে দেখলো সত্যিই দারুন খবর, গত পাঁচ ছ মাস আগে একটা ইন্টারভিউ দিযছিলো এরকম তো কতই দেয় ডাক আসে না আবার ভুলেও যায় কিন্তু সত্যি
ডাক এসেছে, সামনের মাস থেকে জযেনিং
উজ্জ্বল মুখে রানিকে আনন্দে জড়িয়ে ধরে বিতান বলে_চাকরি হযে গেছে
এখন 25 হাজার দেবে তুই আমার জীবনে ভীষন লাকী রে
_আমি? আমি আবার কি করলাম, এই চাকরি টা যদি তোর কয়েকমাস আগে হতো তাহলে আজ তোর কাছে অদিতি থাকতো।
ভুলে যাওয়া কথা আবার মনে পরতে মন বিষন্ন হয়ে গেলো মুখে বললো
_বাদ দে, দেখনা তোকে এবাডিতে আনার পরেই আমার চাকরি হলো আজ অনেকরাত হযে গেছে কাল মিষ্টি খাওয়াবো।
রানির কথায় বিতানের আবার পুরোন কথা মনে পড়ে গেল সত্যিই সেই দিনের পর থেকে আর কোন যোগাযোগ নেই
আশা করেছিলো বিতান একটা নিমন্ত্রণ চিঠির বা একটা ফোনে র
আজ এই আনন্দের খবর টা দিতে ইচ্ছে করলেও নিজেকে সংযত করলো বিতান।
যদি বিয়ে হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে কোথায় আছে কি ভাবে আছে না ফোন করা উচিত হবে না
তারা দু ভাইবোন মিলেই এই খুশী ভাগ করে নেবে
বিতানের জীবনের ছোট ছোট চমক গুলোর মধ্যে আজকের টা সত্যিই সুখের চমক
কাল আগেই সকালের টিউশন গুলো বাদ যাবে এটা জানাতে হবে রাতের গুলো অফিস ফেরত করে নেবে কারন তার অনেক টাকার দরকার রানিকে সুখে রাখার জন্য।
রানি হয়তো শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে ওকে ওতো খাটতে নিষেধ করবে কিন্তু না ও কোন কথাই শুনবে না।
পরের মাসে
প্রথম অফিস গিয়ে ভালোই অভিজ্ঞতা হলো। একটু ভয় ভাব ছিলো কিন্তু কিছুদিন যেতে সে বুঝলো কলিগ রা সব ভালোই বেশ বন্ধু হয়ে গেলো
একটু কাজের চাপ থাকলেও ম্যানেজমেন্ট অতো টা নিষ্ঠুর নয় যেমন সে শুনে এসেছে এতকাল।
অফিস পরিবেশ সে বেশ মানিয়ে নিলো কিছুদিনের মধ্যেই। রানি খুশি মা খুশি শুধু সে নিজে যেনো পুরোপুরি খুশিটা আনতে পারছে না, হয়তো রানির কথাই ঠিক, আর কয়েকমাস আগে হলে সে পুরোপুরি সুখি মানুষ হতো।
বিতান গুনতে থাকে মনে মনে তার জীবনের চমক গুলো কি কি
1_আচমকা ভাবে অদিতর সাথে আলাপ
2_রানির ফিরে আসা আর ডিভোর্স
3_অদিতির চলে যাওয়া
4_রানির শিশুকাল জানা যা অজানা ছিলো
5চাকরি পাওয়া
জানেনা বিতান বিধাতা আর কোন লুকোনো দেওয়াল সামনে রেখেছে কি না।
আপাতত সে বেশ ভালোই আছে।
জাগতিক নিয়মে দিন কেটে যাচ্ছিল, সংসার কিছুটা সচ্ছলতার মুখ দেখলো
বেশ সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন।
অনেকদিন পর বাড়িতে আবার আগের মতো ভালো মন্দ খাওয়া হাসি আনন্দ সব ফিরে আসছিলো কিন্তু আবার হঠাৎ ই মোড় ঘুরে গেলো।
অন্য দিনের মতোই টিফিন টাইমে চুটিয়ে আড্ডা হচ্ছিল হঠাৎ ই সেই ভুলে যাওয়া রিং টোন
সকলের মাঝ থেকে উঠে এসে কাঁপা কাঁপা হাতে তুলে নিলো ফোন, মনে আবার অন্য অনুভুতি।
অস্ফুটে বললো_হ্যালো
_একবার দেখা করবে সেই পুরোন রেস্তোরাঁ তে
বুকের ভেতর আশার আলো
_যাবো, কখন বলো
_এই ধরো 7 টা নাগাদ
_ওকে
ফোন কেটে গেলো
তাহলে কি মত বদলেছে অদিতি, বিয়ে ক্যানসেল করে আবার তার কাছেই ফিরে আসবে
এসব নানা কল্পনা জ্বালে কোনমতে অফিস টাইম পার করলো
বেশ হাঁফাতে হাঁফাতেই এসে পৌছলো সেই চেনা রেস্তোরাঁ তে
চেনা টেবিল টাতে বসলো
মুকুল বলে ছেলেটা হাসিমুখে এগিয়ে এলো, জল দিলো
ও জানে অদিতি না এলে বিতান খাবারের অর্ডার দেবে না।
প্রায় মিনিট পনেরো পর অদিতি এলো।
চোখ কালি, মুখে বিবর্ন ছাপ দেখে মনে হচ্ছে কতদিন ঘুমোযনি, খায় নি খুব উদভ্রান্তের মতো
দেখাচ্ছে তাকে।
বিতান একটু হাসার চেষ্টা করলো
চেয়ার টেনে বসেই চায়ের অর্ডার দিলো অদিতি
কোন কুশল খবর না নিয়েই আচমকা ব্যাগ থেকে বের করলো একটা মোটা খাম। ইতিমধ্যে মুকুল চা দিয়ে গেছে।
আচমকা প্রশ্ন করে অদিতি
_আচ্ছা তোমার এক দিদি আছে না?
_হ্যাঁ,
আলগোছে বলে বিতান, মনে মনে ভাবে কি করে রানির খবর জানলো
আবার জিজ্ঞেস করে
_আচ্ছা, তোমার বাবার নাম তো বিব্রত মুখার্জি
_হ্যাঁ,
_ঠিক জানো
_এ আবার কি ধরনের কথা, বাবার নাম জানবো না
_এমনই মজা করলাম
বলেই ব্যাগ গুছিয়ে ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ই উঠে পড়লো আর যেতে যেতে বলে গেলো
_বাড়ি গিয়ে খামটা খুলে পড়ে দেখো, আমার মনে হয় না সবটা জানার পর আর তুমি আমার সাথে যোগাযোগ রাখবে
এ আবার কি হেঁয়ালি।
অদিতি কি জানেনা সে যেমন ই হোক যাই হোক বিতান তাকে গ্রহন করতে প্রস্তুত।
অদিতি চলে যাবার পর চা টা শেষ করে দাম মিটিয়ে বেরিয়ে পরে বিতান।
মন ছটফট করে কতক্ষণে বাড়ি ফিরে খামটা খুলে ভিতরের রহস্য উন্মোচন করবে
যদি অদিতির জীবনে গোপন কোন ঘটনা থেকেও থাকে তবুও সে অদিতিকে ঘরে আনবে।
সেদিন সারা রাস্তা ছটফট করে কাটলো যেন পথ অনন্ত, তার আর শেষ নেই
বাড়ি ঢুকেই ঘোষনা করে দিলো সে রাতে খাবে না
খেয়ে এসেছে আর অফিসের দরকারি কিছু কাজ আছে কেউ যেনো তাকে বিরক্ত না করে।
জামা ছেড়ে বেশ ঠান্ডা হয়ে গুছিয়ে বসলো বিতান নতুন রহস্য উন্মোচন করতে।
খামটা খুলে ফেলতেই বেরিয়ে এলো কিছু পুরোন চিঠি আর একটা খাতা।
এক নিঃশ্বাসে চিঠি গুলো পড়তে শুরু করলো সে।
এক মহিলার লেখা তার প্রেমিককে।
কোন নাম নেই শুধু লেখা
তোমাকে
পরপর বেশ কয়েকটি চিঠি পড়ে বিতান যে মর্ম উদ্ধার করলো তা হলো এই
কোন এক মেয়ে ভালোবাসতো একজনকে এরপর কোন কারন বশতঃ সেই মানুষ টি চলে যায়
দূরে কাজের জন্য, এবং এই সুযোগে এক সুপাত্রের সন্ধান পেয়ে মেয়েটির বাবা মা তার বিয়ে দেন
অবশ্য কিছু টা মানবিকতার খাতিরেও তারা মেয়েটিকে বিয়ে দেন
কারন আর কিছু নয় ঐ সদা হাসিখুশি সৎ মানুষটির স্ত্রী মারা যেতে তিনি অসহায় বোধ করেন
প্রথম দিকে পডশী হিসেবে ঐ বাচ্চা মেয়েটির দেখাশোনার দায়িত্ব নিলেও পরে তারা নিজের মেয়েটির বিয়ে দিতে চান এবং মেয়েটি ও তখন তার প্রেমিক টির কাছ থেকে কোন খবরাখবর না পেয়ে রাজি হয়ে যায়।
এরপরের ঘটনা কিছু নয় তারা ভালোভাবেই সংসার করতে থাকে কিন্তু গোল বাঁধে বছর 5 পরে
ঐ প্রাক্তন পুরুষটি ফিরে আসে এবং আবার খোঁজ পায় মেয়েটির
শুরু হয় আবার নতুন উদ্যমে মেলামেশা।
সংসারে অনীহা
ভালোমানুষ স্বামী টি এই পরিবর্তন খেয়াল করে না। এরপর তাদের পুরোন প্রেম আবার বাধাবাঁধন হীন গতি পায়।
অবাধে মেলামেশার ফল স্বরূপ মেয়েটি আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়।
এবার শুরু হয নাটক। না এই সন্তান টি নিতে চায় না পুরুষটি আর মেযেটিও চায় না তার প্রেমিকের দান মুছে ফেলতে।
এই নিয়ে আবার শুরু হয় মনোমালিন্য, নতুন মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে চায় নি সে
শুধু শারীরিক সুখ ভোগের জন্য তাকে এই মানুষটি ব্যবহার করেছে এটা বুঝতে পেরে এই সম্পর্ক থেকে চিরদিনের মতো বেরিয়ে আসে সে আবার সংসারে মন দেয়
তার স্বামী নিতান্ত সহজ মনের লোক, তিনি এই সন্তান কে নিজের বলেই জেনে যান এবং যেহেতু বেশি বয়সের সন্তান তাই স্ত্রী র অধিক যত্ন নিতেও ভোলেন না।
এতটা পরে একটু আর পড়তে ইচ্ছা করে না বিতানের
সে আন্দাজ করতে পারে এ তারই জন্ম বৃত্তান্ত। শুধু বুঝতে পারেনা অদিতি কি ভাবে এত তত্ব সংগ্রহ করলো।
এরপর আর কোন চিঠি নয় অদিতর নিজের লেখা কিছু কথা।
আবার পড়তে শুরু করে বিতান
তার দম বন্ধ হয়ে আসে নিজের প্রতি ঘৃনা হয়।
তবুও সবটা জানতেই হবে।
এরপর অদিতি লিখেছে
এতটা পরে তুমি নিশ্চয়ই জেনে গেছো যে তুমি বিব্রত মুখার্জি র ছেলে নও। আমি কি করে জানলাম তা জানতে ইচ্ছা করছে তোমার।
শোন
প্রথম দিকে তোমার কথা বাপিকে বলতে তার তেমন অমত ছিলো না, কিন্তু যখন তোমাকেই বিয়ে করবো সিদ্ধান্ত নিলাম বাপি তোমার নাম, ঠিকানা জানতে চাইলো আর তারপর থেকেই বেঁকে বসলো
আমি জানতাম তুমি একদিন চাকরি পাবেন, না বেকারত্ব আসল কারন ছিলো না
বাপি কেন প্রথমে রাজি হয়েও পরে মত বদলালো তার কারন অনুসন্ধান করতে শুরু করলাম আমি আর তোমার কাছে যোগাযোগ না রাখার প্রস্তাব রাখলাম আমার কাজের সুবিধার জন্য।
এভাবে গোপনে খোঁজ চালাতে চালাতে যা তথ্য আমার হাতে এলো তা তোমার জনামবৃতান্তের থেকেও মর্মান্তিক।
আমাদের বাড়ি র ছাদে চিলেকোঠার ঘরে একটা বহুদিনের পুরোন অব্যবহৃত সুটকেস ছিলো, নিছক কৌতুহল এর বশে তা খুলে ফেললাম
আজ তোমার হাতে যে চিঠি গুলো তোমাকে বিভ্রান্ত করে তুলেছে সেদিন ঐ সুটকেস থেকেই ওগুলো পেয়েছিলাম আর যা পেলাম তা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত তাই সেগুলো তোমাকে দিলাম না।
শুধু তোমাকে বলে রাখি শোন
তোমার আমার দেখা হওয়া টা বোধহয় ঈশ্বর নির্দেশিত নয়তো এই গোপন কান্ডের কথা অজানা থেকে যেতো তবে একটা কথা সত্য জেনো যে সত্যি কখনো ও অপ্রকাশিত থাকে না।
হ্যাঁ, যেটা বলছিলাম
আমি তোমার সব খবর রাখতাম
তোমার চাকরি পাওয়ার খবর ও পেযেছি কিন্তু না একটা অভিনন্দন জানিয়ে ও ফোন করিনি কোন মুখে করবো বলো
আমি যে জেনে গেছিলাম
অনিমেষ রায়, যাকে এতদিন শ্রদ্ধা করে এসেছি আজ তার জন্য ই আমার জীবন বিপন্ন।
হ্যাঁ, তুমি হয়তো আন্দাজ করতে পারছো
আমার বাবা ই তোমার জন্মদাতা
এই চরম সত্য টা মানতে কষ্ট হলেও আমরা নিযতির হাতের পুতুল
আর নয়
এই চিঠি পড়ার পর যখন তুমি সব জানবে তখন আর বোধহয় তোমার আমার দেখা হওয়ার প্রয়োজন হবে না।
আঃ সুখনিদ্রা।
চলি।
আমাকে ভুল বুঝো না।
অদিতি।
সবটুকু শেষ করে স্থানুর মতো বসে রইল বিতান।
শেষ ইংগিত টা ধরতে কোন অসুবিধা হলো না।
কিন্তু বিতান কে বাঁচতে হবে রানির জন্য।
জানলার দিকে তাকিয়ে দেখলো ভোরের আলো আলগা ছড়িয়ে পরেছে কাগজ গুলোর উপর।
বিতান ভাবে আবার এক নতুন ভোর
আবার নতুন কোন চমক।।।। ।।

Tuesday, 4 October 2016

সমব্যথী

 টুটুল।

পাখিটা রোজ খড়কুটো মুখে দিয়ে উড়ে এসে বসে সামনের ঐ কাঠচাঁপা গাছটাতে।
প্রতিদিন একটা করে খড়কুটো নিয়ে জমা করে সে।
এ দৃশ্য বসে বসে রোজ দেখে তিথি। ******
ঠিক ঐ গাছটার তিনটে ডাল যেখানে মিলে মিশে একটা কোন তৈরী করেছে ঐ জায়গায় জড়ো করে খড়কুটো।
এই ভাবে একই দৃশ্য রোজ দেখতে দেখতে তিথি একদিন আবিষ্কার করে
ঐ স্থান টাতে বেশ একটা ঝোপের আকার নিয়েছে।
তারমানে পাখিটা ওখানে বাসা তৈরি করেছে।
******************অদ্ভুত একটা আনন্দ অনুভব করে তিথি।
এমনই ওর রোজ এখানে বসে ঐ পাখির গতিবিধি নজর রাখা একটা অভ্যাস হয়ে গেছে।
কয়েকদিন পর হঠাৎ তিথি দেখে পাখি টা মুখে করে কিছু এনেছে
কিন্তু তা খড়কুটো নয়।
গাছের উপর ঐ ঝোপের পাশে বসতেই ঐ ঝোপ থেকে কিচকিচ
মৃদু শব্দের সাথে বাইরে বেরিয়ে এলো ছোট্ট ছোট্ট লাল লাল
চারটি কচি কচি হা।
আর মা পাখি টা টুক টুক করে ওদের মুখে পুরে দিচ্ছে ঠোঁটে করে বযে
আনা খাদ্য কনা।
সেই থেকে ওদের ছানা গুলোকে দেখা যেনো একটা নেশা হযে গেলো
তিথির।
কিন্তু বিকেলের পর যেই সন্ধ্যা নামে ঝুপ ওমনি পাখিদের কলকাকলি
এক্কেবারে চুপ।
*********************
সেই শুরু হয় তিথির অপেক্ষা পরের দিন ভোরের জন্য।
সকাল হলেই ঐ বারান্দায় বসে কাগজ পরতে পরতে ও লক্ষ্য করে ওদের।
বেশ ভালো লাগে মনটা।
কিন্তু সন্ধ্যা থেকে রাত আর রাতের পরে সকাল অবধি সময় যেনো আর কাটেই না।
আচ্ছা ও যদি ঐ পাখি গুলো পুষতে চায় তাহলে মা কি খুব রাগ করবে?
নাকি এসব পাখি উড়ে উড়ে বেডাতেই ভালো বাসে পোষ মানেনা।
এভাবে কাটে আরো কতদিন
তারপর তিথি দেখে মা পাখিটা আর ওদের মুখের ফাঁকে খাবার দেয় না
একটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেয়।
আর ঐ বাচ্চা গুলো টুক করে বাসা থেকে বার হযে ঐ খাবার নিজেরাই খায়।
এরপর একদিন তিথি দেখে পাখি র বাচ্চা গুলো বেশ কিচকিচ করতে করতে
কাছাকাছি ডালে বেশ উড়ে উড়ে বসছে।
তিথির মনে আসে ওর মায়ের কথা।
ঐ মা পাখিটার মতো তার মা ও তো প্রাণপাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
অফিসের কাজের পরেও আরো দুটো টিউশন করে বাড়ি ফিরে
আবার এই সংসারের কাজ।
শুধু ওর খাদ্য, ভালো থাকার ব্যবস্থা করার জন্য।
এভাবে একদিন তিথি আবিষ্কার করলো মা পাখিটা আর খাবার আনে না
ছোট্ট পাখির ছানা রা বেশ এ ডাল ও ডাল ঘুরে, এ বারান্দা ও বাগান
ঘুরে নিজেরাই বেশ খুঁটে খেতে শিখে গেছে।
তিথির মনটা হঠাৎ বিষন্ন হয়ে গেলো, সে বুঝলো মা পাখিটার এবার বিশ্রাম।
কিন্তু সে? সে তো কোনদিন পারবে না তার মাকে বিশ্রাম দিতে।
নিজের অজান্তেই তার চোখ দুটো ভিজে উঠলো।
আস্তে আস্তে হুইল চেয়ার টা ঘুরিয়ে ঘরের দিকে ফিরে চললো সে
বাইরে তখন সন্ধ্যা নেমেছে ঝুপ।
পাখিদের কলকাকলি এক্কেবারে চুপ

Monday, 19 September 2016

ভাবনা

কি অপরিসীম দুঃসাহসে
পৃথিবীকে প্রতিদিন একটু একটু করে
বুড়ো বানাচ্ছি ।
তার সবুজ শাড়ী কেড়ে নিয়ে
পরাচ্ছি সাদা থান ।
তার চোখের সমস্ত হাসি শুষে নিচ্ছি ।
তার মহীরুহ ', তার পর্বতমালা,
তার সমুদ্র জলোচ্ছ্বাস,
ভরে নিচ্ছি নিজেদের করতল
অপটু হাতের গর্বিত মহিমায
বসুন্ধরা র কাছে ধরে রাখার মতো
কিছুই রাখছি না আর ।
আর এই বুড়ো টে নিঃশেষিত পৃথিবীর সাথে
নিজেদের অজান্তেই ফেলে যাচ্ছি
নিজেদের ভুলের ইতিহাস ।
আগামী প্রজন্মের কাছে ।।।।।

Saturday, 20 August 2016

Facebook

বদল
প্রতিটি নাগরিক জনপথে
প্রতিটি নাগরিক আড্ডায়
প্রতিটি নাগরিক দেওয়ালে
তুমি ছিলে তুমি আছ তুমি থাকবে ।
প্রতিদিন প্রতিটি নাগরিক জানবে
তুমি তাদের পাশে আছো।
তুমি তাদের আশ্বাস দেবে,
বিশ্বাস দেবে, গনতন্ত্রের, বোধের,
বিকাশের, বিশ্বাস দেবে মানবিক দায়িত্ব পালনের ।
প্রতিটি নাগরিক তোমায় বিশ্বাস করবে,
কখনো পাওয়া না পাওয়া র বিভেদ বুঝবে,
প্রতিবাদী অথবা নিশ্চুপ হবে।
তবু তুমি থাকবে, রংবদলে দল বদলে ।
জনপদে, আড্ডা তে, দেওয়ালে ।
বোঝাবে, বিভিন্ন রুপে, বিভিন্ন ভাষায়,
কিন্তু একদিন এভাবে চলতে চলতে
দেখবে, প্রতিটি নাগরিক নিজেদের আড্ডা,
জনমত, পথ, সব বদলে ফেলেছে।।।।।টু টু ল ।

Friday, 19 August 2016

মা

টুটুল চ্যাটার্জি

**********
জন্মদিনের পার্টি কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে।
ঘরে ইতস্তত ছড়ানো কাপ পেল্ট, ডিস মদের বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে।
এখন এতো রাতে আর মৌমিতার ইচ্ছা করছে না ওগুলো গোছগাছ করতে
সকাল থেকে ধকল তো কম গেলো না।
এতো আয়োজন সব একা করা।
ছোটবেলায় মা সব সামলাতেন।
বাজার করা, তার পছন্দের রান্না করা, নিজের হাতে সারা দুপুর জেগে পায়েস বানানো সব।
সন্ধেবেলা তার স্কুলের বন্ধু রা আসতো।
মৌমিতার কিন্তু খাবারের থেকে গিফটের দিকেই মন টা বেশি থাকতো যদিও তার বাবা মা
এসবের দারুণ বিরোধী ছিলেন।
তবু ছোট্ট মৌমিতা তা মানতে পারতো না।
বড় রা অবশ্য তাকে পাওনা উপহার পরে পুশিযে দিতেন।
আজ মনে হয় সে সব দিন কত সুন্দর ছিলো।
আজকাল আর এই একঘেয়ে পার্টি গুলোতে তেমন মন লাগেনা তার তবু কলিগ দের জোডাজোডিতে করতেই হয়।
একটা বড় আই টি কোম্পানি তে আজ বছর 5 এক কাজ করছে মৌ,
সে যেনে গেছে এসব না করলে সে ব্যাক ডেটেড হযে যাবে।
হঠাৎ মনে পড়ে মৌ এর এই যাঃ সেই সন্ধে থেকে মা কে দোতলার একটা ঘরে চুপ করে বসে থাকতে বলে এসেছিলো কারন নীচের এত হই চই হল্লা মায়ের ভালো লাগবে না।
কিন্তু সে তো খেয়াল ই করেনি সন্ধের পর থেকে এতটা রাত হয়ে গেছে মায়ের খোঁজ নেওয়া হয়নি।
এই সব নানা হল্লোরের মধ্যে বেমালুম ভুলে গেছে সে।
কি করে ভুললো?
মাযের তো রাতের খাবারের সময় পেরিয়ে গেছে।
তাহলে মা এর তো শরীর খারাপ হবে এতক্ষনে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।
ছিঃ ছিঃ নিজের উপর খুব রাগ হলো মৌ এর।
দুরদার করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখলো মায়ের ঘরের দরজা ভেজানো ভিতরে আলো জ্বলছে।
আস্তে দরজা ঠেলতেই ভিতর থেকে মা বলে উঠলো 'আয কাছে আয'
সারাদিন খুব ধকল গেলো।
'না মা, আসলে আমার ও এসব ভালো লাগে না, কিন্তু '
' বুঝিরে সব বুঝি, তোদের এ সময় টাই খুব অস্থিরতার, এতে তোদের যত না দোষ তার থেকে বেশি দোষ আমাদের, যারা ছেলেমেয়েকে পয়সা রোজগারের জন্য বড় করেছি মানুষ করার জন্য নয়। '
কিন্তু মা তোমার তো খাওয়া হয়নি।
' না তা হয়নি তবে জন্মদিনের দিন নিজের মেয়েকে না খাইয়ে কি করে খাই বল? ''
'সেকি আমি তো অনেক কিছু খেলাম মা, নীচে প্রচুর আয়োজন হয়েছিলো। '
' জানি জানি, তবে কি জানিস, ওগুলো কিছুই জন্মদিনের আয়োজন নয়। '
ঐ ঢাকা দেওয়া খাবার টা নিয়ে আয
দেখ কি আছে।
টেবিলের উপর রাখা পাত্রের ঢাকনা সরিয়ে দেখলো মৌ এক বাটি পায়েস।
আঃ কি সুন্দর গন্ধ।
বাটি নিয়ে এলো মায়ের কাছে
মা একটা চামচ দিয়ে তুলে দিলো একচামচ পায়েস মৌ এর মুখে।
হাসি ফুটলো মায়ের মুখে বললো' এই বারে তোর জন্মদিন সার্থক হলো। '
কিন্তু মা এসব তুমি :
' কখন করলাম, তাই তো?
তুই তো আমায় চুপ করে বসে থাকতে বলে গেলি, ওরে মেয়ের জন্মদিনে মা কি পারে হাত গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকতে।
ব্যাস, তোরা ওদিকে গান গল্পে মেতে গেলি অমনি আমি চুপচাপ পায়েস টা বানিয়ে ফেললাম।
তোকে কেমন চমকে দিলাম বল।
চোখ ছলছল করে মাকে জড়িয়ে ধরে মৌ বললো 'আমার জন্মদিন এই সার্থক হলো মা।'
মা ও হেসে মৌ কে জড়িয়ে নিলেন বুকে
ঠিক ছোট্ট বেলার মতো।

Sunday, 14 August 2016

নদীর মন

টুটুল  14 *8*2016

নদী টি স্বচ্ছ শান্ত বযে চলেছে তার অভিমুখে
কত কথা তার হৃদয়ের মাঝে রাখা অতি গোপনে
তার এই শান্ত নদীর কথা কেউ শুনতে পায় না
কেউ পায়
আকাশের দিকে চেয়ে থেকেও পৃথিবী
আকাশের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারে না হায়। আড়ালে কত ব্যাথা
কত নারী তার পাডে বসে কত অশ্রু ঝরিয়ে গেছে
স্নান করার ছলে ধুয়ে গেছে কত অভিমান
কত নারী আত্মঘাতী হলো বাঁচাতে সম্মান।
আত্মহননের পথ বেছে নিলো কত নির্যাতিতা
বহে গেলো কত অবাঞ্ছিত পশুপাখির লাস
মৃত পূতিগন্ধ ময, কত আবর্জনা
সইতে হলো এই নদীকে
তেমনি আবার কত প্রেমিক প্রেমিকা বসে এর তীরে
ছোট্ট ঢিল তুলে তরঙ্গ তুললো এর বুকে।
কত কবি এর পারে বসে লিখে নিলো কত কাব্য কথা।
কত চিত্রশিল্পী কত ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুললো এর রূপের মহিমা।
কত উদাসী পুরুষ এর কাছে দু দন্ড সময় কাটিয়ে গেলো।
মন চলে গেলো কোন সূদুরের পারে।
এই সব সুখ দুঃখ সংগী করে নদী চলে নিজের গন্তব্যে।
কাকে বলবে সে তার সুখ দুঃখ এর কথা।
সে মিলিত হবে সাগরে।
আশপাশের আরো অনেক নদী আরো কত কত অভিজ্ঞতা নিয়ে মিলিয়ে যাবে সাগরে।
কিন্তু নদীর অসহায় তার কথা বুঝবে না সাগর।
কত নারী কে আত্মহত্যা র থেকে বাঁচাতে পারেনি সে।
পারেনি আবর্জনা সরিয়ে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করতে।
পারেনি অসহায় পুরুষের উদাসীনতায সংগ দিতে।
সব সহ্য করতে হয়েছে তাকে।
সাগর তো কিছু নেযনা সব ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতা তার আছে।
নদীর ও ইচ্ছে করে সব নারীকে বাড়ি ফেরাতে
সব নিষ্প্রাণ শরীরে প্রান দিতে
সব আবর্জনা সরিয়ে দিতে।
সে যে বড় অসহায়।
সাগর কি বোঝে তার নিরুপযতা, অসহাযতা?

Friday, 12 August 2016

Jidegi

Jindegi Pol Pol inteha leti hay Jindegi se
Mout ki Kay intejer korna? 

Monday, 8 August 2016

নদীর কথা

নদীর কথা



নৌকায় আমি বেঁধেছি ঘর অকূল বরাবর
নৌকা আমার উঠোনবাডি তেল নুন সংসার
অপার নদী অপর কূলে মেঘবালিকা খেলা করে
এপারে থাকি একাকী আমি নৌকার ঘরদোরে
নৌকায় আজ সুজন মাঝি নৌকা চরাচর
জল উতরোল জলের ভেলায বেহুলা লক্খীন্দর
আমি থাকি নদীর ও পরে নৌকার ঘরদোরে
কুয়াশা ঘেরা জলধ জলে পাইনি খুঁজে তারে
পদ্মা মেঘনা পডশী হলেও একাকী বাস করে
গঙ্গা থাকে শিবের জটায বিন্দু সরোবরে
এপারে আমি নৌকার ঘরে শযনে স্বপনে কাঁদি
নৌকায় বাঁধি সমুদ্র শত নদীর পরতে নদী
তেপান্তর এর ঘাট ছুঁয়ে যায় গঙ্গা তীরে বাস
তীরেই জন্ম তীরেই মৃত্যু স্বপ্নে অভিলাষ
নৌকা আমার সোনায মোডা দিক বিদিকে পাল
বইছে এখন উতল হাওয়া একাত্তরের কাল

Saturday, 6 August 2016


Moment

Source: http://www.thefreshquotes.com/dr-seuss-quotes-theodor-seuss-geisel/only-you-can-control-your-future-dr-seuss/ Via:https://play.google.com/store/apps/details?id=com.quarterpi.picturequotes

Life 2

Thursday, 4 August 2016

আমার শৈশব ছিলো গাঁদা ও দোপাটি
প্রাণবন্ত দেশজ ও খাঁটি
আমার কৈশোর ছিলো
শিরীষ জারুল
স্বপ্ন সাদা অস্ফুট বেগুনি
থোকা থোকা কমলাংগ ফুল
প্রকান্ড গাছের মাথা বেঁকে
হাওয়ায় নাচতে এঁকেবেঁকে
ঝুরো ঝুরো ঝডতো বেভুল
কবে ফুলেদের সাথে হযে গেলো আডি
সইল না পাতাবাহারের বাড়াবাড়ি
এখন বাগানে কিছু পীতবর্ন ঘাস
বিবিক্ত ক্যাকটাস। 

Tuesday, 2 August 2016

দুঃখের কাঁথা কাজ করতে বসে
পরতে পরতে সূতোর টান দিয়ে
বুনে চলেছি শক্ত বুনোটে হস্তশিল্প র কারুকাজ
একটার পর একটা মিহি দুঃখ সাজিয়ে
তাঁত বুনেছি, বুনেছি, বুনেই চলেছি।
মসলিন মিহি দুঃখ গুলো সাজিয়ে চলেছি
নিপুন এক সমর্থ তাঁতীর মতো।
যার প্রতিটি পরতে পরতে লেগে আছে
সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম দুঃখের দানা।
অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসলে সাজিয়ে তুলবো

আমার দুঃখ গুলো।
মিহি সূতোয নিপুন বুনোনে ধরা থাকবে
আমার অভিমান, অসম্মান, অপমান সব।
এই ভাবে একদিন শেষ হলোআমার স্বপ্নের তাঁতবোনা।
যেদিন তুলে ধরলাম আমার পরিশ্রমের ফসল
অতি উৎসাহে দেখবো বলে
কিন্তু একি?
কি দেখছি আমি
আমার এতদিনের এতো শ্রমের ফসল
এভাবে
আশ্চর্য হলাম আমি
প্রতিটি বুনোনে ফুটে উঠেছে
ফুল, পাখি, শস্য শ্যামল মাঠ, নদী, পর্বত অরণ্য
এতো সুন্দর এ পৃথিবী
এখানে কোথাও ঐ সূক্ষ্ম দুঃখ গুলো খুঁজে পাচ্ছি না
সব দুঃখ রা অতি দুঃখিত হযে
হারিয়ে গেছে এই সৌন্দর্যের মোহময় মাখা পৃথিবীতে।
আমি ফিরে এলাম আবার সেই একই বৃত্তে।
যেখানে দুঃখের মাঝে ও সুখ লুকিয়ে আছে।
অবহেলায় গাঁথা ( ৩১ )
=================
মৃন্ময় ঘোষ
============
আচ্ছা ছড়া / কবিতা কি সবসময় সুন্দর বিষয় নিয়ে হওয়া খুব জরুরী :D যদি না হয় তবে কি গনধোলাইএর চান্স আছে :D

বাহ্য পেলে জোর সে
আমার পায়ের তলায় সরষে
বিষয় ভীষণ বিপদজনক
বিলম্বে কাম সার সে।

কোষ্ঠকঠিন সালতামামি
ইসবগুলের শিক্ষা দামী
যেসব দিনে প্রবল আবেগ
দৃপ্ত আমি, তৃপ্ত আমি।

যেসব দিনে প্রকোষ্ঠ সাফ
থাকে না আর আড়ষ্ট ভাব
সেসব দিনে ক্ষণে ক্ষনে
নাসিক্য সুর, বসন্ত রাগ।

মাছ ঢাকতে ঢালি নি শাক,
বন্ধুরা কি করেছে রাগ ....
--------------------------------  
সুপ্রিয়া চক্রবর্তী
==============
তোমার একার শুষ্ক কাষ্ঠ
ভেবনা কক্ষনো ,
অনেকেরই কাঠিন্যতে
ভুক্তভুগী জেনো ।
ইসবগুলের কৌটো উজাড়
ডজন থরে থরে ,
তবু ব্যাটার এমনই জেদ
থাকে নিজের ঘরে ।
ঘোমটা খুলে যেদিন বাহির
আগল খোলা ছাড়
তৃপ্ত মনে হাল্কা শরীর
হয়ইত সবার ।
নতুন কথা কি আর কোলে
আদি যুগের কথা ,
কোষ্ঠবদ্ধ আলিঙ্গনে
ভুক্তভুগীর ব্যাথা ।
হাল্কা শরীর কোন রাগিণী
নেকি সুরের গান ,
জানিনে ভাই তবে জানি
দিলখুশ আসমান ।

শাক দিয়ে তো মাছ ঢাকনি
দিল দিয়েছ আড়াল টানি ?
ভোরের ও হাওয়ায় এলে
ঘুম ভাঙ্গাতে কি
চুম হেনে নযন পাতে
ঝিরিঝিরি তিরিতিরি
গুন্ঠিত হাওয়া
কুনন্ঠিতারে শোনাতে। 

Monday, 1 August 2016

শুভ 
শুভ রাত্রি 
আমার ও পরান যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাই গো
তুমি সুখ যদি নাহি পাও
যাও সুখের সন্ধানে যাও
আমি তোমারে পেয়েছি হৃহৃদয় মাঝে
আর কিছু নাহি চাই গো। 
Ami jamini tumi sashi he
Vatihogogono majhe