মা
টুটুল চ্যাটার্জি
**********
জন্মদিনের পার্টি কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে।
ঘরে ইতস্তত ছড়ানো কাপ পেল্ট, ডিস মদের বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে।
এখন এতো রাতে আর মৌমিতার ইচ্ছা করছে না ওগুলো গোছগাছ করতে
সকাল থেকে ধকল তো কম গেলো না।
এতো আয়োজন সব একা করা।
ছোটবেলায় মা সব সামলাতেন।
বাজার করা, তার পছন্দের রান্না করা, নিজের হাতে সারা দুপুর জেগে পায়েস বানানো সব।
সন্ধেবেলা তার স্কুলের বন্ধু রা আসতো।
মৌমিতার কিন্তু খাবারের থেকে গিফটের দিকেই মন টা বেশি থাকতো যদিও তার বাবা মা
এসবের দারুণ বিরোধী ছিলেন।
তবু ছোট্ট মৌমিতা তা মানতে পারতো না।
বড় রা অবশ্য তাকে পাওনা উপহার পরে পুশিযে দিতেন।
আজ মনে হয় সে সব দিন কত সুন্দর ছিলো।
আজকাল আর এই একঘেয়ে পার্টি গুলোতে তেমন মন লাগেনা তার তবু কলিগ দের জোডাজোডিতে করতেই হয়।
একটা বড় আই টি কোম্পানি তে আজ বছর 5 এক কাজ করছে মৌ,
সে যেনে গেছে এসব না করলে সে ব্যাক ডেটেড হযে যাবে।
হঠাৎ মনে পড়ে মৌ এর এই যাঃ সেই সন্ধে থেকে মা কে দোতলার একটা ঘরে চুপ করে বসে থাকতে বলে এসেছিলো কারন নীচের এত হই চই হল্লা মায়ের ভালো লাগবে না।
কিন্তু সে তো খেয়াল ই করেনি সন্ধের পর থেকে এতটা রাত হয়ে গেছে মায়ের খোঁজ নেওয়া হয়নি।
এই সব নানা হল্লোরের মধ্যে বেমালুম ভুলে গেছে সে।
কি করে ভুললো?
মাযের তো রাতের খাবারের সময় পেরিয়ে গেছে।
তাহলে মা এর তো শরীর খারাপ হবে এতক্ষনে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।
ছিঃ ছিঃ নিজের উপর খুব রাগ হলো মৌ এর।
দুরদার করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখলো মায়ের ঘরের দরজা ভেজানো ভিতরে আলো জ্বলছে।
আস্তে দরজা ঠেলতেই ভিতর থেকে মা বলে উঠলো 'আয কাছে আয'
সারাদিন খুব ধকল গেলো।
'না মা, আসলে আমার ও এসব ভালো লাগে না, কিন্তু '
' বুঝিরে সব বুঝি, তোদের এ সময় টাই খুব অস্থিরতার, এতে তোদের যত না দোষ তার থেকে বেশি দোষ আমাদের, যারা ছেলেমেয়েকে পয়সা রোজগারের জন্য বড় করেছি মানুষ করার জন্য নয়। '
কিন্তু মা তোমার তো খাওয়া হয়নি।
' না তা হয়নি তবে জন্মদিনের দিন নিজের মেয়েকে না খাইয়ে কি করে খাই বল? ''
'সেকি আমি তো অনেক কিছু খেলাম মা, নীচে প্রচুর আয়োজন হয়েছিলো। '
' জানি জানি, তবে কি জানিস, ওগুলো কিছুই জন্মদিনের আয়োজন নয়। '
ঐ ঢাকা দেওয়া খাবার টা নিয়ে আয
দেখ কি আছে।
টেবিলের উপর রাখা পাত্রের ঢাকনা সরিয়ে দেখলো মৌ এক বাটি পায়েস।
আঃ কি সুন্দর গন্ধ।
বাটি নিয়ে এলো মায়ের কাছে
মা একটা চামচ দিয়ে তুলে দিলো একচামচ পায়েস মৌ এর মুখে।
হাসি ফুটলো মায়ের মুখে বললো' এই বারে তোর জন্মদিন সার্থক হলো। '
কিন্তু মা এসব তুমি :
' কখন করলাম, তাই তো?
তুই তো আমায় চুপ করে বসে থাকতে বলে গেলি, ওরে মেয়ের জন্মদিনে মা কি পারে হাত গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকতে।
ব্যাস, তোরা ওদিকে গান গল্পে মেতে গেলি অমনি আমি চুপচাপ পায়েস টা বানিয়ে ফেললাম।
তোকে কেমন চমকে দিলাম বল।
চোখ ছলছল করে মাকে জড়িয়ে ধরে মৌ বললো 'আমার জন্মদিন এই সার্থক হলো মা।'
মা ও হেসে মৌ কে জড়িয়ে নিলেন বুকে
ঠিক ছোট্ট বেলার মতো।
টুটুল চ্যাটার্জি
**********
জন্মদিনের পার্টি কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে।
ঘরে ইতস্তত ছড়ানো কাপ পেল্ট, ডিস মদের বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে।
এখন এতো রাতে আর মৌমিতার ইচ্ছা করছে না ওগুলো গোছগাছ করতে
সকাল থেকে ধকল তো কম গেলো না।
এতো আয়োজন সব একা করা।
ছোটবেলায় মা সব সামলাতেন।
বাজার করা, তার পছন্দের রান্না করা, নিজের হাতে সারা দুপুর জেগে পায়েস বানানো সব।
সন্ধেবেলা তার স্কুলের বন্ধু রা আসতো।
মৌমিতার কিন্তু খাবারের থেকে গিফটের দিকেই মন টা বেশি থাকতো যদিও তার বাবা মা
এসবের দারুণ বিরোধী ছিলেন।
তবু ছোট্ট মৌমিতা তা মানতে পারতো না।
বড় রা অবশ্য তাকে পাওনা উপহার পরে পুশিযে দিতেন।
আজ মনে হয় সে সব দিন কত সুন্দর ছিলো।
আজকাল আর এই একঘেয়ে পার্টি গুলোতে তেমন মন লাগেনা তার তবু কলিগ দের জোডাজোডিতে করতেই হয়।
একটা বড় আই টি কোম্পানি তে আজ বছর 5 এক কাজ করছে মৌ,
সে যেনে গেছে এসব না করলে সে ব্যাক ডেটেড হযে যাবে।
হঠাৎ মনে পড়ে মৌ এর এই যাঃ সেই সন্ধে থেকে মা কে দোতলার একটা ঘরে চুপ করে বসে থাকতে বলে এসেছিলো কারন নীচের এত হই চই হল্লা মায়ের ভালো লাগবে না।
কিন্তু সে তো খেয়াল ই করেনি সন্ধের পর থেকে এতটা রাত হয়ে গেছে মায়ের খোঁজ নেওয়া হয়নি।
এই সব নানা হল্লোরের মধ্যে বেমালুম ভুলে গেছে সে।
কি করে ভুললো?
মাযের তো রাতের খাবারের সময় পেরিয়ে গেছে।
তাহলে মা এর তো শরীর খারাপ হবে এতক্ষনে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।
ছিঃ ছিঃ নিজের উপর খুব রাগ হলো মৌ এর।
দুরদার করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখলো মায়ের ঘরের দরজা ভেজানো ভিতরে আলো জ্বলছে।
আস্তে দরজা ঠেলতেই ভিতর থেকে মা বলে উঠলো 'আয কাছে আয'
সারাদিন খুব ধকল গেলো।
'না মা, আসলে আমার ও এসব ভালো লাগে না, কিন্তু '
' বুঝিরে সব বুঝি, তোদের এ সময় টাই খুব অস্থিরতার, এতে তোদের যত না দোষ তার থেকে বেশি দোষ আমাদের, যারা ছেলেমেয়েকে পয়সা রোজগারের জন্য বড় করেছি মানুষ করার জন্য নয়। '
কিন্তু মা তোমার তো খাওয়া হয়নি।
' না তা হয়নি তবে জন্মদিনের দিন নিজের মেয়েকে না খাইয়ে কি করে খাই বল? ''
'সেকি আমি তো অনেক কিছু খেলাম মা, নীচে প্রচুর আয়োজন হয়েছিলো। '
' জানি জানি, তবে কি জানিস, ওগুলো কিছুই জন্মদিনের আয়োজন নয়। '
ঐ ঢাকা দেওয়া খাবার টা নিয়ে আয
দেখ কি আছে।
টেবিলের উপর রাখা পাত্রের ঢাকনা সরিয়ে দেখলো মৌ এক বাটি পায়েস।
আঃ কি সুন্দর গন্ধ।
বাটি নিয়ে এলো মায়ের কাছে
মা একটা চামচ দিয়ে তুলে দিলো একচামচ পায়েস মৌ এর মুখে।
হাসি ফুটলো মায়ের মুখে বললো' এই বারে তোর জন্মদিন সার্থক হলো। '
কিন্তু মা এসব তুমি :
' কখন করলাম, তাই তো?
তুই তো আমায় চুপ করে বসে থাকতে বলে গেলি, ওরে মেয়ের জন্মদিনে মা কি পারে হাত গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকতে।
ব্যাস, তোরা ওদিকে গান গল্পে মেতে গেলি অমনি আমি চুপচাপ পায়েস টা বানিয়ে ফেললাম।
তোকে কেমন চমকে দিলাম বল।
চোখ ছলছল করে মাকে জড়িয়ে ধরে মৌ বললো 'আমার জন্মদিন এই সার্থক হলো মা।'
মা ও হেসে মৌ কে জড়িয়ে নিলেন বুকে
ঠিক ছোট্ট বেলার মতো।
No comments:
Post a Comment