Thursday, 30 March 2017

একটি অপ্রেম

পাহাড়ের কোল ঘেষে যখন সূর্য অস্তাচলে
পাইন গাছের মাথায় তখন রঙীন আলো উপচে পরে।
তুমি তখন গুনগুনিয়ে সুরের ঘরে আপনমনে
মৃদুমন্দ বাতাস এসে তোমার আঁচল জড়িয়ে ধরে।
ইচ্ছে জাগে মাঝনদীতে নৌকা বিহার অকারনে
এমন সময় জোৎস্না এসে হানা যে দেয় জানলা কোনে।
তোমার আমার ভালোবাসায় ঠিক তখন ই ব্যাকুল বাতাস
বকুল ফুলের গন্ধ এসে ভরিয়ে দিলো মিষ্টি সুবাস।
গীতবিতান কোলের কাছে নামিয়ে রেখে বলছো তুমি
প্রেমের গানের স্বরলিপি এবার থেকে খুঁজবে তুমি।
আমি তখন হৃদয় দিয়ে শুধুই অনুভবের মোহে
মেতে আছি তোমার প্রেমে গীতবিতান একটু ছুঁয়ে
স্তব্ধ সকল ঘরের বাতি, একটু পরেই নামবে রাতি
বাতায়নে উঁকি দেবে চাঁদের সাথে তারার সাথী।
পাহাড় কোলে দুলবে তখন সারি সারি আলোর মালা
দূরে পাইন বনের ধারে বাজবে বাঁশী মনকারা।
বাউল এ মন চাইবে তখন মাঝনদীতে নৌকাবিহার
তুমিও তখন সঙ্গে থেকো তোমার গলায় পরাবো হার।

Wednesday, 29 March 2017

বৃহন্নলা

মিত্তির বাড়ি আজ বহুবছর পর আলোর রোসনাই।হ্যা কারন আজ ওদের একমাত্র বংশধর
রোহনের অন্নপ্রাশন।
খুব ঘটা করেছেন মিত্তির গিন্নী।
স্বামীকে বলেই দিয়েছেন এ ব্যাপারে তার কোন মন্তব্য চলবে না।রেবা তার মনোমতো 'সবরকম
আয়োজন করবে কোন ত্রুটি রাখবে না।
তাই মন ভরে খরচা করেছেন মিত্তির গিন্নী রেবা।
এসব আনন্দের মাঝেও কোথায় যেনো একটা গোপন ব্যাথা কাঁটার মতো খচখচ
করে ।
কত যুগ হয়ে গেছে তবুও যেনো সেদিন টা চোখের সামনে এসে সব আনন্দে একঠা কালো ছায়া
হয়ে অদৃশ্য পর্দা হয়ে ঝুলতে থাকে।
কিছুতেই ভুলতে চেয়েও যেনো ভুলতে দেয় না ।
আর এই তো কদিন আগেই যেনো তা আবার নতুন ভাবে উন্মোচিত হলো।
হ্যা, যেদিন হাসপাতাল থেকে খবর টা এলো যে বিমলের ছেলে হয়েছ।
খুশীতে আত্মহারা হয়ে গেছিলো রেবা আর সনাতন।
সত্যি তারা যেনো হাল ছেড়ে দিয়েছিলো ,এই দশ বছরেও যখন বিমলের স্ত্রীর কোলে কেউ এলো না।
তারা ভেবেই নিয়েছিলো এ তাদের পূর্বকৃত পাপের ফল।
তাই এতদিন বাদে বিমলের স্ত্রীর অন্তস্বতা হওয়ার খবর টা পেয়ে প্রতিপদে আশংকায় থেকেছেন
শেষ রক্ষার জন্য।
তাই যেদিন বাড়ি আনা হলো শিশুকে সেদিন থেকেই সব যত্নের দায়িত্ব রেবা তুলে নিলো
নিজের কাঁধে।
এভাবেই কবেই যেনো দু মাসে পা রাখলো রোহন।

রেবার মনেই নেই দিন কিভাবে কেটে যাচ্ছে।
বাড়ির নীচে সেদিন ঢাক ঢোলের আওয়াজে বারান্দা থেকে উঁকি মেরে দেখে রেবা বৃহন্নলার দল
এসেছে।
তার নাতিকে আশীর্বাদ দিতে।
তিনি হ়াঁক পারেন কাজের মেয়ে মালতীকে, হুকুম দেন অঢেল চাল ,ডাল তেল চিনি
মিষ্টি সাজিয়ে নীচে আসতে।
তিনি নিজেও কোলে করে বাচ্চাটিকে নিয়ে নেমে আসেন।
বৃহন্নলার দল অনেক নাচ গান করে হৈ চৈ ফেলে দেয় ।
তারা কিছু দাবি করার আগেই রেবা মালতীকে বলেন তাদের জিনিস গুলো দিয়ে দতে।
ওরা তো খুব খুশী ।এছাড়াও কিছু শাড়ি, টাকা আর সামান্য সোনাও দেন।
তার খালি একটাই অনুরোধ এই দলটি যেনো মনে কোন অপূর্নতা নিয়ে না যায় ,তার
এতোদিনের এতো সাধের নাতি যেনো সুস্থ ও দীর্ঘায়ু হয়।
অনেক আদর আশীর্বাদের পর ঐ দলটি চলে যায় কিন্তু মালতি গজগজ করতেই
থাকে
সে বলে---এ তোমার বাড়াবাড়ি মা জননী।পঁচিশ হাজার টাকা অতো খাবার দাবার
এতো কিছুর কি দরকার ছিলো।
---তোকে এসব বুঝতে হবে না ,তুই নিজের কাজে যা।এ আমার প্রথম বংশধর
ওর সব সুরক্ষা চাই।
এতো কিছু দেওয়া হয়েছে বলে বিমলের বৌ ও একটু রাগারাগি করে তবে সে
মনে মনে খুশীই হয় এই ভেবে যে তার রোহন ঠাকুমার খুব কাছের জন হয়ে উঠবে

আজ এই উৎসবের দিনে ঐ দিনটা বড় বেশী মনে পড়ছে রেবার।
ওরা ঐদিন চলে যাবার পর আবার সেই ভাবনাটা তাকে আস্ত গিলে খেতে এলো।
রোহনের মুখের দিকে তাকিয়ে সব কষ্ট ভুলতে চান রেবা।
তার অনেকদিনের পুরোন পাপের জন্য এতবছর তার আঙিনা শূন্য ছিলো।
ওদের নখচগান হয়ে চলে যাবার আরো দিন পনেরো পর একদিন দুপুরে
রেবা যখন বসে আছে নিজের ঘরের চেয়ার টাতে,হঠাৎ আবার বাইরে তালির
আওয়াজ।
সচকিত হয়ে উঠে রেবা।
মালতী ছুটে এসে বলে
---মা, ওনারা তো আবার এয়েছেন ,তবে এবার একা।মনে হয় বেশী দাও মারবেন।
তখনি বলেছি যে এতো পেশয় দিয়ো না ,তা শুনলে আমার কথা।যাও দেখো কি চায়।
---বাজে না বকে ওকে উপরে নিয়ে আয়।
---ওপরে আনবো ?কি বলো গো তুমি ।
---যা বলছি তাই কর।
রেবার হুকুমে নীচে গিয়ে ডেকে আনে মালতী ঐ মানুষটিক।
উপরে আসার পর ইশারায় মালতীকে চলে যেতে বলে রেবা । তারপর আগুন্তুকের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে
তাকায় রেবা।
মানুষটি রেবাকে অনুরোধ করে ঘরের দরজা টা বন্ধ করতে ,তার কথামতো রেবা দরজায় ছিটকিনী টা তুলে দেয়।
এবার আগুন্তুক বৃহন্নলা মুখ খোলে।
সে বলতে শুরু করে এক জীবন কাব্য।
---আমি সুজন মা , তুমি হয়তো আমায় চিনতে পারনি আর কি করেই বা পারবে ,সেকী আজকের কথা।
----আমায় তুই ক্ষমা করে দে মানিক আমার ।বিশ্বাস কর আমার কোন উপায় ছিলো না।
সেদিনের পর থেকে একদিনের জন্য ও তোকে ভুলিনি।
----জানি মা ,তোমার দোষ ছিলো না ,সমাজের ভয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বাবা তোমার কাছ থেকে আমায় প্রায়
ছিনিয়ে নিয়ে গেছিলেন।তুমি বাধা দিয়েছিলে কিন্তু বাবা ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমার দায় অস্বীকার করেছিলেন।
আচ্ছা ,তোমরা তো আগে উত্তর কলকাতায় থাকতে ,তা এখানে কবে থেকে।
-----তোমার ছোট ভাই এর জন্মের পর থেকে পুরোন সব স্মৃতি ভুলতে এখানে আসা।
----তাই ।আমি সেদিন তোমার নাতির জন্য নাচতে এসেই চিনেছিলাম।আমি চিনেছিলাম আমার মাকে।
পরিচিতি তো কম নয় আমার বাবার।নামকরা এডভোকেট ,তাই ঐ নামটা শুনেই বুঝলাম এই বাড়ির ই আমি একজন।না মা ভয় পেয়ো না ,আজ এতো বছর পরে কোন অধিকার নিয়ে আমি আসিনি।
আজ আমার জগৎ তোমাদের থেকে আলাদা মা।
শুধু ভাবো তো সেদিন কত যত্নে তুমি ঐ মাস দুয়েকের নাতিকে নীচে আনলে যতক্ষন আমরা নাচলাম
ওকে আগলে রাখলে ,আর ঠিক ঐ দু মাস বয়সেই তোমরা আমাকে তুলে দিয়েছিলে আমার জন্য নাচতে আসা
এক বৃহন্নলার হাতে ।সে শুধু তোমার ছবিটা চেয়ে নিয়ে গেছিলো আমায় মা চেনাবে বলে।
সেই থেকে ঐ ছবিটাই আমার মা।তোমাদের যেমন মা কালি ,মা দূর্গা তেমন।
------আর বলিস না, আমি সহ্য করতে পারছি না ।আমি মানছি তোর উপর অন্যায় হয়েছে ।আজ সকলে বিমল কে
আমার প্রথম সন্তান জানলেও আমার মনের আসনে তুই ,শুধু তুই ই আছিস।আমায় ক্ষমা করে দে ।
এখন যে আমার বড় আনন্দের দিন।এতদিন বঞ্চিত করে ভগবান আমায় নাতি দিয়েছেন।তুই কি চাস বল তোকে খুশী মনে সব উজার করে দেবো।
------আমি কিছু নিতে আসিনি মা ,সেদিন সকলের সামনে বলতে পারিনি তাই আজ আবার একা এলাম।বলেই তার কাঁধের ব্যাগ থেকে একটা ছোট্ট সোনালী কৌটো বের করলো আর খুলে ধরলো রেবার চোখের সামনে।
-----দেখো তো মা চিনতে পারো কি না।বিদায়ের দিন আমার হাতে এই দুটো সোনার বালাই তো পরানো ছিলো।
বহু যত্নে তুলে রেখেছিলাম।অনেক কষ্টের মধ্যেও এটা বিক্রি করিনি।
আজ এনেছি শুধু রোহন কে আশীর্বাদের জন্য।
কদিন বাদেই তো ওর অন্নপ্রাশন হবে তখন ওর হাতে পড়িয়ে দিও।শত হোক তোমরা মানো আর না মানো ওতো আমার নিজের ভাইপো।
এতদিন পর তোমরা যেমন আনন্দ করছো এটুকু করে আমায় একটু আনন্দের ভাগ নিতে দাও।
আর তো কোনকিছুর ভাগ নিতে পারছি না।
রেবা কিছু বলার আগেই কৌটো টা তার হাতে দিয়েই দরজা খুলে নেমে যায় সুজন।
******
আলোর রোশনাই, শাঁখের আওয়াজ উলুধ্বনি এসবের ভিতরেও মন টা ক়েঁদে উঠে রেবার।
সবার অলক্ষ্যে বালা জোড়া পড়িয়ে দেন রোহনের কচি হাতে।
তিনি জানেন মিত্তির বাবু যখন কথা দিয়েছেন আজ রেবার কোন কাজের কৈফিয়ত নেবেন না তাহলে তিনি
কথা রাখবেন।
মনে মনে বললেন ,রোহন তোর হাতেই রয়ে গেলো আমার কোল খালি করা সন্তানের স্মৃতি।।।।

টুটুল(শিউলি)

বৃহন্নলা মিত্তির বাড়ি আজ বহুবছর পর আলোর রোসনাই।হ্যা কারন আজ ওদের একমাত্র বংশধর রোহনের অন্নপ্রাশন। খুব ঘটা করেছেন মিত্তির গিন্নী। স্বামীকে বলেই দিয়েছেন এ ব্যাপারে তার কোন মন্তব্য চলবে না।রেবা তার মনোমতো 'সবরকম আয়োজন করবে কোন ত্রুটি রাখবে না। তাই মন ভরে খরচা করেছেন মিত্তির গিন্নী রেবা। এসব আনন্দের মাঝেও কোথায় যেনো একটা গোপন ব্যাথা কাঁটার মতো খচখচ করে । কত যুগ হয়ে গেছে তবুও যেনো সেদিন টা চোখের সামনে এসে সব আনন্দে একঠা কালো ছায়া হয়ে অদৃশ্য পর্দা হয়ে ঝুলতে থাকে। কিছুতেই ভুলতে চেয়েও যেনো ভুলতে দেয় না । আর এই তো কদিন আগেই যেনো তা আবার নতুন ভাবে উন্মোচিত হলো। হ্যা, যেদিন হাসপাতাল থেকে খবর টা এলো যে বিমলের ছেলে হয়েছ। খুশীতে আত্মহারা হয়ে গেছিলো রেবা আর সনাতন। সত্যি তারা যেনো হাল ছেড়ে দিয়েছিলো ,এই দশ বছরেও যখন বিমলের স্ত্রীর কোলে কেউ এলো না। তারা ভেবেই নিয়েছিলো এ তাদের পূর্বকৃত পাপের ফল। তাই এতদিন বাদে বিমলের স্ত্রীর অন্তস্বতা হওয়ার খবর টা পেয়ে প্রতিপদে আশংকায় থেকেছেন শেষ রক্ষার জন্য। তাই যেদিন বাড়ি আনা হলো শিশুকে সেদিন থেকেই সব যত্নের দায়িত্ব রেবা তুলে নিলো নিজের কাঁধে। এভাবেই কবেই যেনো দু মাসে পা রাখলো রোহন। রেবার মনেই নেই দিন কিভাবে কেটে যাচ্ছে। বাড়ির নীচে সেদিন ঢাক ঢোলের আওয়াজে বারান্দা থেকে উঁকি মেরে দেখে রেবা বৃহন্নলার দল এসেছে। তার নাতিকে আশীর্বাদ দিতে। তিনি হ়াঁক পারেন কাজের মেয়ে মালতীকে, হুকুম দেন অঢেল চাল ,ডাল তেল চিনি মিষ্টি সাজিয়ে নীচে আসতে। তিনি নিজেও কোলে করে বাচ্চাটিকে নিয়ে নেমে আসেন। বৃহন্নলার দল অনেক নাচ গান করে হৈ চৈ ফেলে দেয় । তারা কিছু দাবি করার আগেই রেবা মালতীকে বলেন তাদের জিনিস গুলো দিয়ে দতে। ওরা তো খুব খুশী ।এছাড়াও কিছু শাড়ি, টাকা আর সামান্য সোনাও দেন। তার খালি একটাই অনুরোধ এই দলটি যেনো মনে কোন অপূর্নতা নিয়ে না যায় ,তার এতোদিনের এতো সাধের নাতি যেনো সুস্থ ও দীর্ঘায়ু হয়। অনেক আদর আশীর্বাদের পর ঐ দলটি চলে যায় কিন্তু মালতি গজগজ করতেই থাকে সে বলে---এ তোমার বাড়াবাড়ি মা জননী।পঁচিশ হাজার টাকা অতো খাবার দাবার এতো কিছুর কি দরকার ছিলো। ---তোকে এসব বুঝতে হবে না ,তুই নিজের কাজে যা।এ আমার প্রথম বংশধর ওর সব সুরক্ষা চাই। এতো কিছু দেওয়া হয়েছে বলে বিমলের বৌ ও একটু রাগারাগি করে তবে সে মনে মনে খুশীই হয় এই ভেবে যে তার রোহন ঠাকুমার খুব কাছের জন হয়ে উঠবে । আজ এই উৎসবের দিনে ঐ দিনটা বড় বেশী মনে পড়ছে রেবার। ওরা ঐদিন চলে যাবার পর আবার সেই ভাবনাটা তাকে আস্ত গিলে খেতে এলো। রোহনের মুখের দিকে তাকিয়ে সব কষ্ট ভুলতে চান রেবা। তার অনেকদিনের পুরোন পাপের জন্য এতবছর তার আঙিনা শূন্য ছিলো। ওদের নখচগান হয়ে চলে যাবার আরো দিন পনেরো পর একদিন দুপুরে রেবা যখন বসে আছে নিজের ঘরের চেয়ার টাতে,হঠাৎ আবার বাইরে তালির আওয়াজ। সচকিত হয়ে উঠে রেবা। মালতী ছুটে এসে বলে ---মা, ওনারা তো আবার এয়েছেন ,তবে এবার একা।মনে হয় বেশী দাও মারবেন। তখনি বলেছি যে এতো পেশয় দিয়ো না ,তা শুনলে আমার কথা।যাও দেখো কি চায়। ---বাজে না বকে ওকে উপরে নিয়ে আয়। ---ওপরে আনবো ?কি বলো গো তুমি । ---যা বলছি তাই কর। রেবার হুকুমে নীচে গিয়ে ডেকে আনে মালতী ঐ মানুষটিক। উপরে আসার পর ইশারায় মালতীকে চলে যেতে বলে রেবা । তারপর আগুন্তুকের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় রেবা। মানুষটি রেবাকে অনুরোধ করে ঘরের দরজা টা বন্ধ করতে ,তার কথামতো রেবা দরজায় ছিটকিনী টা তুলে দেয়। এবার আগুন্তুক বৃহন্নলা মুখ খোলে। সে বলতে শুরু করে এক জীবন কাব্য। ---আমি সুজন মা , তুমি হয়তো আমায় চিনতে পারনি আর কি করেই বা পারবে ,সেকী আজকের কথা। ----আমায় তুই ক্ষমা করে দে মানিক আমার ।বিশ্বাস কর আমার কোন উপায় ছিলো না। সেদিনের পর থেকে একদিনের জন্য ও তোকে ভুলিনি। ----জানি মা ,তোমার দোষ ছিলো না ,সমাজের ভয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বাবা তোমার কাছ থেকে আমায় প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে গেছিলেন।তুমি বাধা দিয়েছিলে কিন্তু বাবা ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমার দায় অস্বীকার করেছিলেন। আচ্ছা ,তোমরা তো আগে উত্তর কলকাতায় থাকতে ,তা এখানে কবে থেকে। -----তোমার ছোট ভাই এর জন্মের পর থেকে পুরোন সব স্মৃতি ভুলতে এখানে আসা। ----তাই ।আমি সেদিন তোমার নাতির জন্য নাচতে এসেই চিনেছিলাম।আমি চিনেছিলাম আমার মাকে। পরিচিতি তো কম নয় আমার বাবার।নামকরা এডভোকেট ,তাই ঐ নামটা শুনেই বুঝলাম এই বাড়ির ই আমি একজন।না মা ভয় পেয়ো না ,আজ এতো বছর পরে কোন অধিকার নিয়ে আমি আসিনি। আজ আমার জগৎ তোমাদের থেকে আলাদা মা। শুধু ভাবো তো সেদিন কত যত্নে তুমি ঐ মাস দুয়েকের নাতিকে নীচে আনলে যতক্ষন আমরা নাচলাম ওকে আগলে রাখলে ,আর ঠিক ঐ দু মাস বয়সেই তোমরা আমাকে তুলে দিয়েছিলে আমার জন্য নাচতে আসা এক বৃহন্নলার হাতে ।সে শুধু তোমার ছবিটা চেয়ে নিয়ে গেছিলো আমায় মা চেনাবে বলে। সেই থেকে ঐ ছবিটাই আমার মা।তোমাদের যেমন মা কালি ,মা দূর্গা তেমন। ------আর বলিস না, আমি সহ্য করতে পারছি না ।আমি মানছি তোর উপর অন্যায় হয়েছে ।আজ সকলে বিমল কে আমার প্রথম সন্তান জানলেও আমার মনের আসনে তুই ,শুধু তুই ই আছিস।আমায় ক্ষমা করে দে । এখন যে আমার বড় আনন্দের দিন।এতদিন বঞ্চিত করে ভগবান আমায় নাতি দিয়েছেন।তুই কি চাস বল তোকে খুশী মনে সব উজার করে দেবো। ------আমি কিছু নিতে আসিনি মা ,সেদিন সকলের সামনে বলতে পারিনি তাই আজ আবার একা এলাম।বলেই তার কাঁধের ব্যাগ থেকে একটা ছোট্ট সোনালী কৌটো বের করলো আর খুলে ধরলো রেবার চোখের সামনে। -----দেখো তো মা চিনতে পারো কি না।বিদায়ের দিন আমার হাতে এই দুটো সোনার বালাই তো পরানো ছিলো। বহু যত্নে তুলে রেখেছিলাম।অনেক কষ্টের মধ্যেও এটা বিক্রি করিনি। আজ এনেছি শুধু রোহন কে আশীর্বাদের জন্য। কদিন বাদেই তো ওর অন্নপ্রাশন হবে তখন ওর হাতে পড়িয়ে দিও।শত হোক তোমরা মানো আর না মানো ওতো আমার নিজের ভাইপো। এতদিন পর তোমরা যেমন আনন্দ করছো এটুকু করে আমায় একটু আনন্দের ভাগ নিতে দাও। আর তো কোনকিছুর ভাগ নিতে পারছি না। রেবা কিছু বলার আগেই কৌটো টা তার হাতে দিয়েই দরজা খুলে নেমে যায় সুজন। ****** আলোর রোশনাই, শাঁখের আওয়াজ উলুধ্বনি এসবের ভিতরেও মন টা ক়েঁদে উঠে রেবার। সবার অলক্ষ্যে বালা জোড়া পড়িয়ে দেন রোহনের কচি হাতে। তিনি জানেন মিত্তির বাবু যখন কথা দিয়েছেন আজ রেবার কোন কাজের কৈফিয়ত নেবেন না তাহলে তিনি কথা রাখবেন। মনে মনে বললেন ,রোহন তোর হাতেই রয়ে গেলো আমার কোল খালি করা সন্তানের স্মৃতি।।।। টুটুল(শিউলি)

Monday, 13 March 2017

https://plus.google.com/115800623622652530632/posts/AARoY3rKEFq?_utm_source=1-2-2

Sunday, 12 March 2017

বিবাহ টুটুল চ‍্যাটার্জী(শিউলি) প্রকৃতির অলিখিত নিয়মেই কুসুম কুঁড়ি থেকে ফোটে ফুল কোমল কিশোরীও সেভাবেই হয়ে উঠে পূর্ন নারী। ***** আজোও এক সহবাসের ছাড়পত্র তুলে দিলো কেউ অনাঘ্রাত কুসুম ভোর ভালোবাসার হাতে। অলিখিত চুক্তি স্বাক্ষরের দাগ ফেলে যাবে সিঁথির সিঁদুর। আঙুলের ফাঁক দিয়ে পিছলে গলে যাবে '"প্রেম"। সময়ের বাঁকে বাঁকে পাহাড়ের গায়ে থমকে সোনালী রোদ্দুর সবুজ সবুজ কচি লেবু মনে লেপে দেবে নির্মেদ মাটি। এক বিন্দু সিঁদুর আর লাল বেনারসী কত সহজে পেয়ে যাওয়া যায় বিছানার হিসেব। শব্দেরা পাশাপাশি গড়ে তোলে ব‍্যাঞ্জনাময় কবিতা দুটো মানুষ গড়ে তোলে দাম্পত‍্যের মাঝে প্রেম হারানোর ছবি। প্রেম হারানোর অলিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় , বিবাহ নামের সংশোধনাগারের বন্ধ দরজায়। বেয়াদপ, দুর্বিনীত নারীদের সংশোধন করা হয়। পুরুষের হাতে উঠে আসে প্রতিরাতে ধর্ষনের ছাড়পত্র। কি অসাধারন কায়দায় সঠিক আইনে বশ করে নারী। বোকা পুরুষ সাঁতার কাটে নারীর শরীরী খানাডোবায় ঢেউ ভরা সমুদ্রের সন্ধান দেয় না আইনি চুক্তি। প্রবাল মুক্তো খুঁজতে গিয়ে পুরুষ তুলে আনে -----, বালিতে পরে থাকা মুক্তোর খোলস। ঝিনুক নামে সে শুধুই বৈঠকখানা সাজায়।

Wednesday, 8 March 2017

ফাগুন

কে যেনো ডেকে ফিরে যায়
বাতাসে তারই সুর শুনি
পলাশের ডালে ডালে ঐ নিমন্ত্রন লিপি
বার্তা পাঠিয়েছে ।
লাল ফুলে ছেয়ে গেছে মাটি।
ভোরের বাতাসে ভিজে গেছে বেহিসেবী যত পান্ডুলিপি।
আজ মন পাখনা মেলেছে দিগন্ত বিস্তৃত ওই আকাশে
ওখানে যে আজ পাখীরাও ফাগের রং মেখে আত্মহারা।
আমার ডাকবাক্সে বহুদিন পর এক নীল খামের উঁকি,
অব‍্যবহৃত চিঠির বাক্সে বন্দী খাম,সরলতায় বের করে আনি
আকাশের দিক মাথা তুলে গাছে গাছে ফাগের নিমন্ত্রন বার্তা দেখি
খাম খুলি এক অপ্রত‍্যাশিত আকাঙ্খা নিয়ে।
দেখি নীল খামে কে যেন একমুঠো ফাগ দিয়েছে পাঠিয়ে,
আমায় শুভ ফাগুনের শুভেচ্ছা জানিয়ে।

Friday, 3 March 2017

মেঘলা একাকী চিল উড়া দুপুরে
যত অতীত ভুলগুলো কাছে এসে ঘোরাঘুরি করে
মনের আনাচে কানাচে বাসা বেঁধে থাকা স্মৃতি
চোখের কোন দিয়ে গড়িয়ে পরে।
কালো মেঘের কানাকানি ,আর বাতাসের টানাটানি
ফিসফিস করে বলে যায় কত ঝিমিয়ে পড়া বেদনার কথা
সহজিয়া মনে তখন আবার বেদনার ঝটপটানি।
সবুজ কচি ঘাসের মতো সহজ অতীত আবার মাথা তুলে তাকায়।
সেই গোলাপী বিকেলের কাছাকাছি দিনের কথা কয়ে যায়।
তবুও শান্ত রাখার মিছে চেষ্টা অকারনেই প্রতিরোধের দেওয়াল তোলে
ভুলে যাবার মিথ্যে অভিনয় সফলতার গলিতে হারিয়ে যায়।
মেঘ সরে গেলেই আবার ধূ ধূ কড়ামিঠে দুপুরের শুরু হয়।
কালবৈশাখীর পর তো বাতাস সুশীতল হয়ে যায়
ঠিক তখনই আশেপাশে ঘুরতে থাকা ভুল গুলো ফিরে যায় নিজের আস্তানায়।

Thursday, 2 March 2017

http://wp.me/s7M1HB-227

ঝড়ের রাত 

​ঝাড়বাতিটা ঘরের চাল থেকে আগের মতোই ঝুলছে শুধু সন্ধ‍্যে হলেই ওই হরিপদ দা আর ঘাড়ে লম্বা মতন লাঠির ডগায় আগুন এনে ওটার ভিতরে রাখা প্রতিটি বাতিতে আলো দিতে আসেনা।

কাঠের নড়বরে হয়ে যাওয়া আলগা হয়ে ঝুলে পড়া দরজার কপাট গুলো বাইরের থেকে আসা বাতাসের ঝাপটায় খটাস খটাস আওয়াজ তুলে এদিক ওদিক করে।

জীর্ন পুরানো বাড়িটার কড়ি বগরা গুলো এখন ও তাকিয়ে আছে নীচে পড়ে থাকা আবলুস কাঠের খাটটার দিকে।

অর্ধচন্দ্রাকৃতি ভেঙে যাওয়া আয়না টা বহুকাল কারোর চেহারার প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত করেনি।

জানলার বেঁকে চুড়ে যাওয়া শিক  ,বারন্দার মরচে পড়ে যাওয়া রেলিং একটা মন খারাপ করা গল্প নিয়ে ঝুঁকে আছে নীচের দিকে।

বদ্ধ অন্ধকারচ্ছন্ন ঘরগুলোতে ভ‍্যাপসা গন্ধের সাথে বাস করে একটা দুটো বাঁদুর আর পেঁচা।

ঝড়ের ঝাপটায় ভাঙা কপাটের এলোমেলো পাল্লা পড়ার শব্দে বাঁদুর গুলোও ভয় পেয়ে সিঁটিয়ে থাকে।

এইসব সঙ্গিসাথী নিয়ে আরো একজন বাস করে এই বাড়ীতে , সে হলো জোনাকী।

এই বাড়ির অন্দর মহলের একটা ঘরে সে ও ভয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকে জড়োসরো হয়ে কোন প্রানের সংস্পর্শের আশায়।

এখানে কি বা দিন ,কি বা রাতের পরিবেশ।

বাড়িটার ক্রমশ জড়াজীর্ন অবস্থার সাথে আস্তে আস্তে খাপ খাইয়ে নিয়েছে সে।

রোজ ই তার মনে আশা জাগে আজ হয়তো কিছু ঘটবে হয়তো এই বাড়িতে আবার আসবে প্রানের পরশ।

কিন্তু মাঝে মাঝে জোনাকীর বেশ বিরক্ত ও লাগে এভাবে আর কতদিন ই ভা সে আগলে রাখবে এই বাড়ির প্রতিটি মহল।

জোনাকী নিজেও ভাবে এক এক দিন সবাই তো এক এক করে ছেড়ে চলে গেছে 

সেই বা কেন যেতে পারছে না।

তারই বা এতো আগলে থাকতে ইচ্ছা হয় কেন সব কিছু।

কোনকোন দিন দিনের বেলাতেও তো সরসর করে সাপ চলে যেতে দেখেছে সে।

রাতে তো দু চোখে ঘুম আসে না তার।

যখন একলা খুব ভয় করে জোনাকীর তখন ঐ দেয়ালে লটকানো পুরোন বাঁধানো ছবি গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে সে।

ছবির ফ্রেম গুলো উই ধরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেছে ছবির মানুষ গুলোর চেহারা হলদেটে বিবর্ন হয়ে গেছে কাউকে আর তেমন ভাবে চেনা যায় না।

তবুও জোনাকীর মনে হয় ওরা আছে ,আগের মতোই জোনাকীর পাশেই আছে।

ডাকলে এক্ষুনি সাড়া দেবে।

শুধু এই বিশ্বাসেই সব ভয় কে জয় করে এখনো পরিত‍্যক্ত এই বাড়িটা আগলে রেখেছে জোনাকী।

বাইরে আজ ঝড়টা সত‍্যিই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।

দরজার কবজাগুলো তে মরচে পড়ে এমনিতেই নড়বরে অবস্থা তার উপর আজ যে ভাবে এপাশ ওপাশ খটাস খটাস করে পড়ছে ছিটকিনি ভাঙা দরজা গুলো মনে হচ্ছে আজ রাতেই দেহ রাখবে।

ভয়ে সিঁটিয়ে একপাশে জড়োসরো হয়ে বসে আছে জোনাকী আর ছবির পরিচিত 

মানুষগুলোকে আপ্রান ডেকে চলেছে যেনো আজ রাতে আসে কোন অতিথি 

তার একাকীত্ব ঘোচাতে।

ঠান্ডা হিমেল বৃষ্টি ভেজা বাতাস ঘরে ঢুকে ভ‍্যাপসা গন্ধটা টা আরো তীব্র হয়ে নাকে 

আসছে।

একটা সোঁদা সোঁদা ভেজা ভেজা স্পর্শ উঠে আসছে মাটি থেকে।

এমন সময় সত‍্যি সত‍্যি বাইরে থেকে কে যেনো ডাকছে বাড়িতে কেউ আছেন নাকি বলে ,2 পর্ব

না না ,জোনাকী কোন সারাশব্দ করছে না।

অপরিচিত অতিথিটি আস্তে আস্তে খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে চলে এসেছে।

নিজের মনেই বলছে যাক ,বাবা একটা আস্তানা তো পাওয়া গেলো আজ এই 

ঝড়বৃষ্টি র থেকে মাথাটা বাঁচানো যাবে।

ঘরে ঢুকে ওই লোকটি নিজের রুমাল বের করে মাথাটা মুছতে মুছতে বললো 

,বৃষ্টি আসার আর দিন পেলো না, এই অজ গাঁয়ে সেই সন্ধ‍্যে থেকে একটা 

আস্তানা খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হবার জোগাড়।

তারপর সে নিজেই ব‍্যাগ থেকে একটা চাদর বের করে একপাশ টা একটু ঝেড়েমুছে বসলো।

জোনাকী এতক্ষন ধরে সব খেয়াল করছিলো কিন্তু সাহস পাচ্ছিল না ওর কাছে 

ঘেঁষার।

লোকটি আপন মনেই গজগজ করতে লাগলো এই গ্রামে চাকরী করতে হবে এগন তাকে।

চাকরী টা যদি নেয় তাহলে অবশ‍্য থাকার বন্দোবস্ত স্কুল থেকেই করবে।

কিন্তু আজ যে দুরাবস্থার মধ‍্যে পড়লো রাত কেটে কাল বাড়ি ফিরতে পারলে হয়।

সারারাত লোকটি জেগেই বসে রইলো ,আর অপেক্ষা করতে লাগলো ঝড় বৃষ্টি 

থামার।

জোনাকী ও বসে রইলো চুপ করে অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে যাতে তাকে কেউ দেখতে না পায় ।

মাঝে মাঝে ছবির মানুষ গুলোর দিকে তাকাচ্ছিলো সে আর মনে মনে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছিলো পূর্বপুরুষদের কাছে।

এই জীর্ন বাড়িটায় আজ কতদিন পর একটু অন‍্যরকম অনুভুতি হতে লাগলো 

জোনাকীর।

পরেরদিন সকালে বৃষ্টি কমে গেলো আকাশ পরিস্কার ঝলমলে হয়ে উঠলো।

কিন্তু বাড়ীর ভিতরের আবওহাওয়ার তো কোন পরিবর্তন নেই।

জোনাকী আশংকা করছিলো এই দেখে যে সকাল বেলা বৃষ্টি ধরে আসতে না আসতেই লোকটি তল্পিতল্পা গুটিয়ে রেডী হয়ে নিচ্ছিল বেড়িয়ে যাবে বলে।

সারা রাত জোনাকী ঘাপটি মেরে থাকলেও এই দিনের বেলা তার মনে হলো 

লোকটা খুব খারাপ নয় খুব অসুবিধেয় পরেই কাল এই বাড়ীটায় আশ্রয় 

নিতে বাধ‍্য হয়েছিলো।

জোনাকীর খুব ইচ্ছে করছিলো লোকটার কাছে গিয়ে বলে আজকের দিনটা থেকে যেতে তার সাথে।

আর কাল ও শুনেছে যে লোকটা এখানে চাকরী পেয়েছে।

আচ্ছা ওতো এখানেই থাকতে পারে ।

তাহলে এই জড়াজীর্ন বাড়ীটা আবার প্রান পাবে আর জোনাকী ও তার একাকীত্ব 

কাটিয়ে উঠতে পারবে।

এতদিন বাদে ঐ ছবির হলদে হওয়া মানুষ গুলো জোনাকির প্রার্থনা শুনেছে।

কিন্তু একি যেই জোনাকী একটু একটু করে ধীর পায়ে লোকটার দিকে এগোতে লাগলো ওমনি লোকটার মুখটা ওমন ফ‍্যাকাশে মেরে যাচ্ছে কেন?

আরে আরে জোনাকীকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিয়ে লোকটা ওতো হাউমাউ করতে করতে পরি কি মরি করে ছুট লাগলো কেন?

কাল রাতভোর তো দিব‍্যি ছিলো ।

কি জানি বাবা 

মনে মনে কাঁধ ঝাঁকিয়ে হাত উল্টিয়ে আবার নিজের ঘরে ঐ বাঁদুর আর পেঁচার সাথেই সময় কাটাতে চলে এলো জোনাকী।