একটি অভিজ্ঞতার গল্প
এখনো পূজোর মরসুম চলছে।আর কদিন বাদেই জগদ্ধাত্রী পূজো হয়ে আবার সব একঘেঁয়ে জীবনের ধারাবাহিকতায় ঢুকে পড়বে।
আজ যে ঘটনাটা বলতে যাচ্ছি অনেকদিন ধরেই বলবো বলবো করে আর শারীরিক কারনে লেখা হয়ে উঠেনি ।
এখন যেমন চারিদিকে একটা আতংকের মধ্যে বাস করছি আমরা সব সময় মনে হয় সর্বত্র যেনো বাড়ীর প্রতিটি আনাচে কানাচেই বোধহয় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে রয়েছে নারীধর্ষন কারী।
সুযোগ পেলেই লাফিয়ে পড়বে আর নিমেষে ছিন্নভিন্ন করে দেবে সব।
আজ যে ঘটনা বলবো তা শুনে এই বিশ্বাস আসবে মনে যে এখনো কিছু ভালো লোক আছে এই বাসযোগ্য বাহভুমিতে।
সাল টা মনে নেই তবে ঘটনাটা পূজোর দিনের তাই এই পূজো পূজো ভাব চলতে চলতে মনে হলো লেখাটা দেওয়া দরকার।
আমার মেয়ে তখন এই বছর পনেরো ষোল বয়স।
ওর এক বন্ধু থাকতো বেলঘরিয়ায়।এখন অবশ্য সে দিল্লীর বাসিন্দা।
যাই হোক ,তা ওর মা আমায় ফোন করে বললো যে আমি যেনো অবশ্য ই আমার মেয়েকে নিয়ে ওনার বাড়ি যাই ঐ পূজোর অষ্টমীর দিন।
তা আমি ও মত দিলুম যাবো বলে রাজীও হলুম।
কারন আগে থেকেই ওনাদের ফ্যামিলীর সাথে একটা সখ্যতা হয়ে গেছিলো।
আর আমরা তখন থাকতাম শ্যামনগরে।কাজেই কোন বাধা নেই ওদের বাড়ী যাবার কারন টা আর কিছুই নয় উনি যেহেতু ওনার অসুস্থ শাশুড়ীকে ফেলে বেড়োতে পারবেন না তাই আমি গেলে আমার সাথে ভরসা করে ওর মেয়ে কে একটু ঠাকুর দেখতে ছাড়তে পারবেন নয়তো মেয়ে টার বেড়োন হবে না।
কাজেই আমার রাজী না হবার মতো কিছু ছিলো না।
তাই অষ্টমীর দিন যথাসময়ে আমার স্বামীকে বলে আমি ও আমার মেয়ে রওনা হলাম বেলঘরিয়ার উদ্দেশ্যে।
যথারীতি পৌঁছেও গেলাম ।
সহেলী র মা অনেক কিছু রান্নাবান্না করেছিলেন আর উনি বরাবরই খুব আতিথি বৎসল তাই আয়োজনের কোন ত্রুটি ছিলো না
আমরা দুপুরে খাওয়ার পাট চুকিয়ে একটু বিকেল বিকেল বেড়িয়ে পড়লাম ঠাকুর দেখার উদ্দেশ্যে।
বেশীদূর নয় কথা হলো ঐ দমদম পর্যন্ত দেখে আবার ওকে বেলঘরিয়ার দিকের ট্রেনে চড়িয়ে দেবো তারপর ও একলাই ফিরবে কারন ওদের বাড়ি টা একদম স্টেশন সংলগ্ন।
সেই মতো সব স্থির করার পর সহেলি দমদম স্টেশনে এসেই একটা ফোনের বুথ থেকে ওর বাবাকে ফোন করলো আর বললো কাকিমা আপনারা এখান থেকেই ট্রেনে চড়ে পড়ুন আর বেলঘরিয়ায় যেতে হবে না তাই আমাদের কাজ কমে গেলো কিছু ক্ষন পরেই ওর বাবা এসে স্কুটারে করে ওকে নিয়ে গেলো আর আমরাও সামনেই এক নং প্ল্যাটফর্মে যে গাড়ী টা ঢুকলো তাতে চড়ে পড়লাম।
দমদম থেকে শ্যামনগরের দূরত্ব মাত্র ত্রিশ মিনিট ট্রেনে আর মহিলা কামরা বেশ খালিই ছিলো কারন অনেক রাত ও হয়ে গেছিলো।
এইভাবে বেশ কিছু সময় পেরিয়ে যেতে একটা স্টেশনে ট্রেন থামতে আমি মেয়ে কে বললাম দেখতো ব্যারাকপুর আসলো কি না ?
আমার এই কথা শুনে এক মহিলা বলে উঠলেন ,আপনি কোথায় যাবেন?এই গাড়ি তো ব্যারাকপুর যাবে না ,এটা ডানকুনি লোকাল।
আমার তো তখন মাথায় হাত সত্যিই তাড়াহুড়ো তে কোন গাড়ি না দেখেই চড়ে পড়েছি এক নং প্ল্যাটফর্ম বলে নিশ্চিতরূপে ভেবে নিয়েছি যে আমাদের ওদিক কার ই কোন গাড়ি হবে কিন্তু স্টেশন টা যে দমদম এখান থেকে অনেক গাড়িই যায় তা মাথায় ছিলো না।
ওদিকে ততক্ষনে অনেকে বুদ্ধি দিতে শুরু করেছে ডানকুনি অবধি চলুন এই ট্রেন টাই আবার ফিরবে তখন দমদমে নেমে যাবেন তারপর নিজের গন্ত্যবের গাড়ি ধরবেন।
এমনিতেই রাত বাড়ছে তাই এই কথা খুব যুক্তিসংগত বলে মনে হলো না এই সময় এক মহিলা বললেন তিনি দু এক স্টেশন পরেই নামবেন সেখান থেকে ডানলপের অটো পাওয়া যাবে তারপর ডানলোপ থেকে বেলঘরিয়ার অটো ।
তাই তার কথায় রাজি হলাম।
সংগে অল্প বয়সী মেয়ে তায় আবার পুজোর সাজ আর আমার বয়স টাও তখন কম তাই অচেনা জায়গায় একটু ভয় ভয় করছিলো।
অগত্যা ওনার সাথে দু স্টেশন বাদে নামার সিদ্ধান্ত নিলাম ।
এই বার শুরু হলো আমার গল্প।
ভদ্রমহিলা স্টেশন আসতেই আমাদের নিয়ে হুড়মুড় করে নেমে পড়লেন আর মেন প্ল্যাটফর্ম এ না গিয়ে পাশের একটা শুরু আলপথ যা নীচের দিকে নেমে গেছে ,পুরো অন্ধকার সেখান থেকে তড়তড়িয়ে নামতে নামতে বললেন যে ওনার বাড়ি নাকি এই পথেই কাছে হয়।
তা আমি তখন বললাম কিন্তু আমি তো এ ভাবে চিনবো না ,
আমি কি করে যাবো ।এই কথা শেষ হতে না হতেই একটা লোক কে দেখলাম উল্টো দিক থেকে স্টেশনে র উপরে উঠে আসছে ,ওনাকে দেখেই এই মহিলা বলে উঠলেন এনারা ভুল ট্রেনে চড়ে পড়েছেন এদের একটু ডানলোপে র অটো ধরিয়ে দিন।
ব্যাস এই কথা বলেই আমার মতামতের তোয়াক্কা না করেই আমাদের ঐ অচেনা লোকটা র হাতে সঁপে দিয়ে উনি তড়বড়িয়ে উধাও হয়ে গেলেন।
আমার তো তখন রীতিমতো ভয়এ বুক ঢিপঢিপ করতে শুরু করেছে ঘড়িতে দেখছি রাত প্রায় এগারো টা বেজে গেছে।
যাই হোক ঠাকুরের কাছে কোনো কোনো সময় আত্মসমর্পণ করতে হয়।
আমিও তাই করতে করলাম।
লোকটি সামনে সামনে চলেছে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে আর আশেপাশে ঝোপঝাড় জংগল।
মাঝখানে একটা শুরু রাস্তা এগলি ও গলি ঘুরে যাচ্ছিই তো যাচ্ছি সামনে লোকটি পেছনে আমি ও আমার মেয়ে।
লোকটা র মুখের দিকে ভালো করে দেখিও নি ভয় তে তাই আজো ও শুধু ঐ লুংগি পড়া গলায় একটা আধময়লা গামছা ঝোলানো আর বিড়ি ফোঁকা দৃশ্য টাই মনে পড়ে।
যাই হোক আমার কপাল ই ভালো হোক বা ঠাকুরের কৃপা হোক সব গলিঘুঁজি পেড়িয়ে লোকটা আমাদের নিয়ে এলো বড় রাস্তায়।
তবুও এখানে তেমন পুজো পুজো মনে হচ্ছে না ,যে গলি দিয়ে বেড়োলাম তার উল্টোদিকে বড় রাস্তার একধারে দু একটা অটো দাঁড়িয়ে আছে।
লোকটি একটা অটোওয়ালাকে বললো আমাদের ডানলোপ অবধি পৌঁছে দিতে তাক বুঝে অটোওয়ালা অনেক টাকা চাইলো তখন লোকটি বললো ওনারা বিপদে পড়ে এসেছেন অতো টাকা সংগে করে ঘুরছেন নাকি?
এই শুনে অটোওয়ালা একটু মিনমিনে হয়ে চল্লিশ টাকা চাইলো এবং এই শুধু নয় লোকটি বলে দিলো যে আমাদের যেনো ডানলপ থেকে বেলঘরিয়ার অটো স্ট্যান্ড দেখিয়ে দেওয়া হয়।
তারপর আর কি ঐ অটোওয়ালা যথারীতি আমাদের ডানলপে পৌঁছে হাত দিয়ে দূরের বাঁদিকের রাস্তা দেখিয়ে বলে দিলো যে ওখান থেকেই বেলঘরিয়ার অটো পাওয়া যাবে।আমরা সেইমতো বেলঘরিয়ার অটো স্ট্যান্ডে এসে দেখলাম বিশাল লাইন।
তারপর আর কি ডানলপ থেকে বেলঘরিয়ায় পৌঁছলাম এবং সেখানে দেখলাম বেশ ভীড় ,এবার বেশ বোঝা যাচ্ছে যে পুজোর অষ্টমীর তিথি কলকাতা য় ঠাকুর দেখে সবাই ফেরার তাগিদ।
এরপর যা হলো সেটা মামুলী ঘটনা।
একটি লোক এতরাতে একটা অল্পবয়সী মেয়ে সহ আমায় একা পেয়ে ভাব জমাতে এসেছিলো,টিকিট কাটবে কি না জানতে ।
আমি বেশ গম্ভীর ভাবেই বললাম যে আমাদের রিটার্ন টিকিট কাটা।
আমার গলার স্বরে কিছু একটা ছিলো আর এমনিতেই আমি একটু গম্ভীর প্রকৃতির তা যারা আমার ছবি দেখেন তারা জানেন যে সব সময় একটা গোমড়ামুখের ছবিই আপলোড হয় কাজেই যে কারনেই হোক লোকটা চলে গেলো আর আমরা বেলঘরিয়ার থেকে রানাঘাট লোকাল ধরে বেশ নির্বিঘ্নে ই শ্যামনগরে পৌঁছে গেলাম ।
দেখলাম আমার কর্তা টি ঘর বার করছে ।পাড়ায় তখনোও মাইকে গান চলছে ,ঘড়িতে তখন বারোটা বেজে গেছে একটু জিরিয়ে সব ঘটনা টা বললাম আমার মেয়ের বাবা কে ।
তাই ভাবি তখন মোবাইল ফোন ছিলো না বলে কত অসুবিধার মধ্যে পড়তে হতো ।
আর এও ভাবি সব মানুষ ই রেপিস্ট নয়,সবাই নারীলোলুপ নয় ,সবাই সুযোগসন্ধানী নয়।
আজ এখানেই থামছি এই রকম আর একটি অভিজ্ঞতার কথা আছে আমার ঝুলিতে তা এর থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা।বলবো অন্য আরেকদিন।
এখনো পূজোর মরসুম চলছে।আর কদিন বাদেই জগদ্ধাত্রী পূজো হয়ে আবার সব একঘেঁয়ে জীবনের ধারাবাহিকতায় ঢুকে পড়বে।
আজ যে ঘটনাটা বলতে যাচ্ছি অনেকদিন ধরেই বলবো বলবো করে আর শারীরিক কারনে লেখা হয়ে উঠেনি ।
এখন যেমন চারিদিকে একটা আতংকের মধ্যে বাস করছি আমরা সব সময় মনে হয় সর্বত্র যেনো বাড়ীর প্রতিটি আনাচে কানাচেই বোধহয় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে রয়েছে নারীধর্ষন কারী।
সুযোগ পেলেই লাফিয়ে পড়বে আর নিমেষে ছিন্নভিন্ন করে দেবে সব।
আজ যে ঘটনা বলবো তা শুনে এই বিশ্বাস আসবে মনে যে এখনো কিছু ভালো লোক আছে এই বাসযোগ্য বাহভুমিতে।
সাল টা মনে নেই তবে ঘটনাটা পূজোর দিনের তাই এই পূজো পূজো ভাব চলতে চলতে মনে হলো লেখাটা দেওয়া দরকার।
আমার মেয়ে তখন এই বছর পনেরো ষোল বয়স।
ওর এক বন্ধু থাকতো বেলঘরিয়ায়।এখন অবশ্য সে দিল্লীর বাসিন্দা।
যাই হোক ,তা ওর মা আমায় ফোন করে বললো যে আমি যেনো অবশ্য ই আমার মেয়েকে নিয়ে ওনার বাড়ি যাই ঐ পূজোর অষ্টমীর দিন।
তা আমি ও মত দিলুম যাবো বলে রাজীও হলুম।
কারন আগে থেকেই ওনাদের ফ্যামিলীর সাথে একটা সখ্যতা হয়ে গেছিলো।
আর আমরা তখন থাকতাম শ্যামনগরে।কাজেই কোন বাধা নেই ওদের বাড়ী যাবার কারন টা আর কিছুই নয় উনি যেহেতু ওনার অসুস্থ শাশুড়ীকে ফেলে বেড়োতে পারবেন না তাই আমি গেলে আমার সাথে ভরসা করে ওর মেয়ে কে একটু ঠাকুর দেখতে ছাড়তে পারবেন নয়তো মেয়ে টার বেড়োন হবে না।
কাজেই আমার রাজী না হবার মতো কিছু ছিলো না।
তাই অষ্টমীর দিন যথাসময়ে আমার স্বামীকে বলে আমি ও আমার মেয়ে রওনা হলাম বেলঘরিয়ার উদ্দেশ্যে।
যথারীতি পৌঁছেও গেলাম ।
সহেলী র মা অনেক কিছু রান্নাবান্না করেছিলেন আর উনি বরাবরই খুব আতিথি বৎসল তাই আয়োজনের কোন ত্রুটি ছিলো না
আমরা দুপুরে খাওয়ার পাট চুকিয়ে একটু বিকেল বিকেল বেড়িয়ে পড়লাম ঠাকুর দেখার উদ্দেশ্যে।
বেশীদূর নয় কথা হলো ঐ দমদম পর্যন্ত দেখে আবার ওকে বেলঘরিয়ার দিকের ট্রেনে চড়িয়ে দেবো তারপর ও একলাই ফিরবে কারন ওদের বাড়ি টা একদম স্টেশন সংলগ্ন।
সেই মতো সব স্থির করার পর সহেলি দমদম স্টেশনে এসেই একটা ফোনের বুথ থেকে ওর বাবাকে ফোন করলো আর বললো কাকিমা আপনারা এখান থেকেই ট্রেনে চড়ে পড়ুন আর বেলঘরিয়ায় যেতে হবে না তাই আমাদের কাজ কমে গেলো কিছু ক্ষন পরেই ওর বাবা এসে স্কুটারে করে ওকে নিয়ে গেলো আর আমরাও সামনেই এক নং প্ল্যাটফর্মে যে গাড়ী টা ঢুকলো তাতে চড়ে পড়লাম।
দমদম থেকে শ্যামনগরের দূরত্ব মাত্র ত্রিশ মিনিট ট্রেনে আর মহিলা কামরা বেশ খালিই ছিলো কারন অনেক রাত ও হয়ে গেছিলো।
এইভাবে বেশ কিছু সময় পেরিয়ে যেতে একটা স্টেশনে ট্রেন থামতে আমি মেয়ে কে বললাম দেখতো ব্যারাকপুর আসলো কি না ?
আমার এই কথা শুনে এক মহিলা বলে উঠলেন ,আপনি কোথায় যাবেন?এই গাড়ি তো ব্যারাকপুর যাবে না ,এটা ডানকুনি লোকাল।
আমার তো তখন মাথায় হাত সত্যিই তাড়াহুড়ো তে কোন গাড়ি না দেখেই চড়ে পড়েছি এক নং প্ল্যাটফর্ম বলে নিশ্চিতরূপে ভেবে নিয়েছি যে আমাদের ওদিক কার ই কোন গাড়ি হবে কিন্তু স্টেশন টা যে দমদম এখান থেকে অনেক গাড়িই যায় তা মাথায় ছিলো না।
ওদিকে ততক্ষনে অনেকে বুদ্ধি দিতে শুরু করেছে ডানকুনি অবধি চলুন এই ট্রেন টাই আবার ফিরবে তখন দমদমে নেমে যাবেন তারপর নিজের গন্ত্যবের গাড়ি ধরবেন।
এমনিতেই রাত বাড়ছে তাই এই কথা খুব যুক্তিসংগত বলে মনে হলো না এই সময় এক মহিলা বললেন তিনি দু এক স্টেশন পরেই নামবেন সেখান থেকে ডানলপের অটো পাওয়া যাবে তারপর ডানলোপ থেকে বেলঘরিয়ার অটো ।
তাই তার কথায় রাজি হলাম।
সংগে অল্প বয়সী মেয়ে তায় আবার পুজোর সাজ আর আমার বয়স টাও তখন কম তাই অচেনা জায়গায় একটু ভয় ভয় করছিলো।
অগত্যা ওনার সাথে দু স্টেশন বাদে নামার সিদ্ধান্ত নিলাম ।
এই বার শুরু হলো আমার গল্প।
ভদ্রমহিলা স্টেশন আসতেই আমাদের নিয়ে হুড়মুড় করে নেমে পড়লেন আর মেন প্ল্যাটফর্ম এ না গিয়ে পাশের একটা শুরু আলপথ যা নীচের দিকে নেমে গেছে ,পুরো অন্ধকার সেখান থেকে তড়তড়িয়ে নামতে নামতে বললেন যে ওনার বাড়ি নাকি এই পথেই কাছে হয়।
তা আমি তখন বললাম কিন্তু আমি তো এ ভাবে চিনবো না ,
আমি কি করে যাবো ।এই কথা শেষ হতে না হতেই একটা লোক কে দেখলাম উল্টো দিক থেকে স্টেশনে র উপরে উঠে আসছে ,ওনাকে দেখেই এই মহিলা বলে উঠলেন এনারা ভুল ট্রেনে চড়ে পড়েছেন এদের একটু ডানলোপে র অটো ধরিয়ে দিন।
ব্যাস এই কথা বলেই আমার মতামতের তোয়াক্কা না করেই আমাদের ঐ অচেনা লোকটা র হাতে সঁপে দিয়ে উনি তড়বড়িয়ে উধাও হয়ে গেলেন।
আমার তো তখন রীতিমতো ভয়এ বুক ঢিপঢিপ করতে শুরু করেছে ঘড়িতে দেখছি রাত প্রায় এগারো টা বেজে গেছে।
যাই হোক ঠাকুরের কাছে কোনো কোনো সময় আত্মসমর্পণ করতে হয়।
আমিও তাই করতে করলাম।
লোকটি সামনে সামনে চলেছে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে আর আশেপাশে ঝোপঝাড় জংগল।
মাঝখানে একটা শুরু রাস্তা এগলি ও গলি ঘুরে যাচ্ছিই তো যাচ্ছি সামনে লোকটি পেছনে আমি ও আমার মেয়ে।
লোকটা র মুখের দিকে ভালো করে দেখিও নি ভয় তে তাই আজো ও শুধু ঐ লুংগি পড়া গলায় একটা আধময়লা গামছা ঝোলানো আর বিড়ি ফোঁকা দৃশ্য টাই মনে পড়ে।
যাই হোক আমার কপাল ই ভালো হোক বা ঠাকুরের কৃপা হোক সব গলিঘুঁজি পেড়িয়ে লোকটা আমাদের নিয়ে এলো বড় রাস্তায়।
তবুও এখানে তেমন পুজো পুজো মনে হচ্ছে না ,যে গলি দিয়ে বেড়োলাম তার উল্টোদিকে বড় রাস্তার একধারে দু একটা অটো দাঁড়িয়ে আছে।
লোকটি একটা অটোওয়ালাকে বললো আমাদের ডানলোপ অবধি পৌঁছে দিতে তাক বুঝে অটোওয়ালা অনেক টাকা চাইলো তখন লোকটি বললো ওনারা বিপদে পড়ে এসেছেন অতো টাকা সংগে করে ঘুরছেন নাকি?
এই শুনে অটোওয়ালা একটু মিনমিনে হয়ে চল্লিশ টাকা চাইলো এবং এই শুধু নয় লোকটি বলে দিলো যে আমাদের যেনো ডানলপ থেকে বেলঘরিয়ার অটো স্ট্যান্ড দেখিয়ে দেওয়া হয়।
তারপর আর কি ঐ অটোওয়ালা যথারীতি আমাদের ডানলপে পৌঁছে হাত দিয়ে দূরের বাঁদিকের রাস্তা দেখিয়ে বলে দিলো যে ওখান থেকেই বেলঘরিয়ার অটো পাওয়া যাবে।আমরা সেইমতো বেলঘরিয়ার অটো স্ট্যান্ডে এসে দেখলাম বিশাল লাইন।
তারপর আর কি ডানলপ থেকে বেলঘরিয়ায় পৌঁছলাম এবং সেখানে দেখলাম বেশ ভীড় ,এবার বেশ বোঝা যাচ্ছে যে পুজোর অষ্টমীর তিথি কলকাতা য় ঠাকুর দেখে সবাই ফেরার তাগিদ।
এরপর যা হলো সেটা মামুলী ঘটনা।
একটি লোক এতরাতে একটা অল্পবয়সী মেয়ে সহ আমায় একা পেয়ে ভাব জমাতে এসেছিলো,টিকিট কাটবে কি না জানতে ।
আমি বেশ গম্ভীর ভাবেই বললাম যে আমাদের রিটার্ন টিকিট কাটা।
আমার গলার স্বরে কিছু একটা ছিলো আর এমনিতেই আমি একটু গম্ভীর প্রকৃতির তা যারা আমার ছবি দেখেন তারা জানেন যে সব সময় একটা গোমড়ামুখের ছবিই আপলোড হয় কাজেই যে কারনেই হোক লোকটা চলে গেলো আর আমরা বেলঘরিয়ার থেকে রানাঘাট লোকাল ধরে বেশ নির্বিঘ্নে ই শ্যামনগরে পৌঁছে গেলাম ।
দেখলাম আমার কর্তা টি ঘর বার করছে ।পাড়ায় তখনোও মাইকে গান চলছে ,ঘড়িতে তখন বারোটা বেজে গেছে একটু জিরিয়ে সব ঘটনা টা বললাম আমার মেয়ের বাবা কে ।
তাই ভাবি তখন মোবাইল ফোন ছিলো না বলে কত অসুবিধার মধ্যে পড়তে হতো ।
আর এও ভাবি সব মানুষ ই রেপিস্ট নয়,সবাই নারীলোলুপ নয় ,সবাই সুযোগসন্ধানী নয়।
আজ এখানেই থামছি এই রকম আর একটি অভিজ্ঞতার কথা আছে আমার ঝুলিতে তা এর থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা।বলবো অন্য আরেকদিন।
No comments:
Post a Comment